নির্বাচনের আগে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে মেট্রোরেল : ব্লুমবার্গ
স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উত্তরায় এর উদ্বোধন করেন তিনি। মেট্রোরেল নিয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রশংসা করে প্রতিবেদন তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর ঢাকায় উদ্বোধন হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল। যাতায়াত সহজ করতে জাপানের সহযোগিতায় নির্মিত এ প্রকল্পটি বুধবার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এতে বলা হয়, উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার উদ্বোধন হয় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকার মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে এ প্রকল্পটি। রিজার্ভ হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি ও জ্বালানি সংকটে থাকা বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতেও সহায়তা করবে এটি।
ঢাকার ৩০৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় এক কোটির বেশি মানুষের বাস। শহরটিতে গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় গড়ে সাত কিলোমিটার। দশ বছর আগেও ঢাকায় গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় ছিল গড়ে ২১ কিলোমিটার।
বিশ্বব্যাংক বলছে, ভবিষ্যতে ঢাকার গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় গড়ে চার কিলোমিটারে নেমে আসতে পারে, যা সাধারণ মানুষের হাঁটার গতির চেয়ে কম।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সাবেক প্রধান মার্টিন রামা বলেন, ‘ঢাকার মতো একটি শহরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প এই মেট্রোরেল। আপনি ভারতের অনেক শহরে তাকালে দেখতে পারবেন যে, লোকজনের কাজে যাওয়ার উপায়ের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মেট্রোরেল নারীদের জন্য একটি নিরাপদ যান।’
ব্লুমবার্গ বলছে, ঢাকায় যানজটের কারণে প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। পাশাপাশি এতে প্রতি বছর কয়েক বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়। দ্য ইকোনমিস্টের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ২০২২-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের বসবাসযোগ্য ১৮২টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান তলানিতে।
বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সালে মেট্রোরেল প্রকল্প হাতে নেয়। কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। ঢাকা ম্যাস র্যাযপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের লাইন-৬ এর সম্প্রসারণ, স্টেশন প্লাজা নির্মাণ, কিছু স্টেশনে নতুন করে জমি অধিগ্রহণ, পরামর্শকের পেছনে ব্যয় বৃদ্ধি, বাড়তি ভ্যাটের কারণে আরও প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বেড়েছে। বর্তমানে এর খরচ দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকা দিচ্ছে ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা। আর সরকার এ প্রকল্পে খরচ করছে ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন