নির্বাচনের জন্য সংস্কার খুব জরুরি : এ্যানি

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, আমাদের জনগণের স্পষ্ট বক্তব্য হলো আমরা দ্রুত দৃশ্যমান বিচার দেখতে চাই। আরেক দিকে সংস্কারও দেখতে চাই। নির্বাচনের জন্য সংস্কার খুব জরুরি।

তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত বিচার কিন্তু দৃশ্যমান না। দ্রুত বিচার করতে হবে। হাসিনার পরিবারের যারা এই দুঃশাসন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, যারা ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পর্যায়ের গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত ছিল, মানুষের অত্যাচার, নির্যাতন, দুঃশাসন তৈরি করেছিল, তাদের বিচারও দৃশ্যমান করতে হবে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের আমানউল্ল্যাপুর আয়েশা দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

এ্যানি বলেন, এদেশে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে তারা (আওয়ামী লীগ) আবার কিন্তু ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ তৈরি করবে। একটা ভয়ংকর ফ্যাসিবাদ তৈরি করতে চাইবে। এ সুযোগ দেশের মানুষ আর কখনো দিবে না, দিতে চায় না। সেজন্য এই সরকারকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে।

তিনি বলেন, হাসিনা পালিয়ে যাবার ৮ মাস হয়েছে। কিন্তু এখনো ঢাকাতে ফ্যাসিবাদের ঝটিকা মিছিল হচ্ছে। হঠাৎ করে ঝটিকা মিছিল করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরা যারা অপরাধী, ষড়যন্ত্রকারী, খুনি, রক্তের দাগ এখনো শুকিয়ে যায়নি, তারাই অপকর্মগুলো করছে। যেটা হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৬-১৭ বছর হয়েছে। এরা গণশত্রু ছিল, গণশত্রু ছিল বলেই পালিয়ে গেছে। হাসিনা পালিয়ে গেছে ঠিকই, কিন্তু হাসিনার অর্থ পালায়নি। সবাইকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে?

তিনি আরও বলেন, এখনো পর্যন্ত বিচার কিন্তু দৃশ্যমান না। দ্রুত বিচার করতে হবে। হাসিনার পরিবারের যারা এই দুঃশাসন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, যারা ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পর্যায়ের গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত ছিল, মানুষের অত্যাচার, নির্যাতন, দুঃশাসন তৈরি করেছিল, তাদের বিচারও দৃশ্যমান করতে হবে। আমাদের জনগণের স্পষ্ট বক্তব্য হলো আমরা দ্রুত দৃশ্যমান বিচার দেখতে চাই। আরেক দিকে সংস্কারও দেখতে চাই। নির্বাচনের জন্য সংস্কার খুব জরুরি।

তিনি বলেন, বিচারের মধ্য দিয়ে এ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ এদের বাংলাদেশের রাজনীতি করা কোনো সুযোগ নেই। এরা হঠাৎ হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করে। হঠাৎ করে এসে যদি এভাবে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করে, তাহলে জনগণের দুর্ভোগ আছে। জনগণের ক্ষতি করার জন্য এরা আবার ওঁৎপেতে আছে। এদের ভুল হয়েছে- আজ পর্যন্ত জনগণের সামনে এসে বলেনি। বরং হুংকার দিচ্ছে, ঝটিকা মিছিল করে দেখিয়ে দিবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ৫ তারিখের আগে যেসব অবৈধ অস্ত্র ছিল আওয়ামী লীগের হাতে, হেলমেট বাহিনীর হাতে- এগুলো উদ্ধার করছে এ বর্তমান সরকার? ৫ তারিখ, ৬ তারিখ থানা লুট হয়েছে। এ লুটের অস্ত্র কি উদ্ধার হয়েছে? অবৈধ অস্ত্র ও লুটের অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। আইনশৃঙ্খলার অবনতি তো স্বাভাবিক কারণেই হবে। ঝটিকা মিছিল যারা করে, এ অস্ত্রগুলো তারা আবার ব্যবহার করবে না? লুটের অস্ত্র এবং অবৈধ অস্ত্র দুটো মিলে তারা কিন্তু শক্তি সঞ্চয় করতে চায়। কিন্তু এ সুযোগ এ সরকার দিতে পারবে না। কারণ আমাদের আন্দোলনের ফসল এ সরকার। এজন্যই সরকারের কাছে আমাদের দাবি বেশি, প্রত্যাশা বেশি। অবিলম্বে এ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।

‘অস্ত্র যদি উদ্ধার না হয় এই অস্ত্র আমাদের বিরুদ্ধে আবার ব্যবহার হবে। আমরা প্রশাসনের কাছে যা বলি, প্রশাসন এখন পর্যন্ত সেটা করছে না। উপরের সিদ্ধান্ত পাচ্ছে না। সত্যিকারের যে দাবিগুলো সে দাবিগুলো যদি মীমাংসা না করেন, তাহলে এদেশে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে তারা আবার কিন্তু ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ তৈরি করবে।’

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. হাছিবুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির সদস্যসচিব মো. মোখলেছুর রহমান হারুন। বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আবুল কালাম হাওলাদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দের রহমান রায়হানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মো. এমরান, থানা যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।