নুসরাতের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে যা আছে
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন লেখেন শাহবাগ থানার এসআই শামছুর রহমান। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে তার মরদেহ হাসপাতালের হিমঘর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
প্রতিবেদনে এসআই মোহাম্মদ শামছুর রহমান বলেন, সকালে ৯টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে স্ট্রেচারে শোয়ানো অবস্থায় নুসরাত জাহান রাফির মরদেহ দেখতে পাই। নুসরাতের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলী (৩৫) তাকে শনাক্ত করেন। সাক্ষীদের উপস্থিতিতে আয়া চাঁন বিবির সহায়তায় মরদেহটি ওলট-পালট করে দেখা হয়।
তিনি প্রতিবেদনে বলেন, নুসরাতের বয়স ১৮ বছর। মাথার চুল কালো ও পোড়া, লম্বা অনুমান ১৮ ইঞ্চি। কপাল স্বাভাবিক। উভয় চোখ ও মুখ বন্ধ, নাক দিয়ে সাদা ময়লা বেরিয়ে এসেছে। মুখমণ্ডল গোলাকার, উভয় কান, থুতনি, গলা, ঘাড়সহ পোড়া ও ঝলসানো। উভয় হাতের আঙুল পর্যন্ত রাউন্ড গজ-ব্যান্ডেজ, যাতে পোড়া ঝলসানো। গলার নিচ থেকে বুক-পেট-পিঠ-যৌনাঙ্গ-মলদ্বারসহ উভয় পায়ের পাতা পর্যন্ত রাউন্ড গজ-ব্যান্ডেজ, যাতে পোড়া ঝলসানো। গায়ের রঙ ফর্সা, লম্বা অনুমান ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। পরনে রাউন্ড গজ ছাড়া কিছু নেই, সরকারি চাদর দিয়ে ঢাকা।
সুরতহাল প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদে ও ঢামেক বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক স্বাক্ষরিত মৃত্যুর প্রমাণপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়- গত ৬ এপ্রিল সকাল অনুমান পৌনে ১০টায় ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার সাইক্লোন সেন্টার ভবনের ছাদে নুসরাত জাহানের গায়ে কেরোসিন অথবা পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলে তিনি অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন। আহত অবস্থায় লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য সোনাগাজী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সর্বশেষ উন্নত চিকিৎসার জন্য একই তারিখে অর্থাৎ ৬ এপ্রিল বিকাল তিনটায় ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিইউ ওয়ার্ডের রেড ইউনিটে এনে তাকে ভর্তি করা হয়।
সুরতহাল প্রতিবেদনের বলা হয়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নুসরাতকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর কারণ হাসপাতালের দেওয়া মৃত্যু সনদে উল্লেখ থাকলেও, নুসরাতের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
সুরতহাল প্রতিবেদনে নুসরাত প্রকৃতপক্ষে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কিনা সে বিষয়ে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের মতামত জানতে চাওয়া হয়।
সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরিকারী এসএই শামসুর রহমানের সঙ্গে হাসপাতালে এএসআই মিনারা খাতুন ও কনস্টেবল মো. রমজান আলী উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন