নেত্রকোনার দুর্গাপুরে প্রতারণার শিকার এক সন্তানের জননী তানিয়া
প্রথমে দুইজনের প্রেম। এই প্রেম দৈহিক মেলামেশায় গড়ায় অন্তঃসত্ত্বায়। নানান জল্পনার কল্পনার পর ইসলামি শরিয়ত মতে বিয়ে। কিন্তু বিয়ের পরও না পাচ্ছে স্ত্রী’র স্বীকৃতিতে স্বামীর ঘরে ঠাঁই; না পাচ্ছেন সন্তানের পিতৃপরিচয়। স্ত্রী—সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে দুই মাস বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তানিয়া আক্তার(২৮)নামের এক জননী।
ভুক্তভোগী তানিয়া আক্তার নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়নের তেলুঞ্জিয়া গ্রামের জবান আলীর মেয়ে। আর অভিযুক্ত স্বামী ইমন সরকার দুর্গাপুর পৌরসভার সাধুপাড়া এলাকার দুলাল সরকারের ছেলে।
তানিয়া আক্তার জানান,আড়াই বছর আগে ইমন সরকার তার প্রথম বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে তানিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। ব্যবসা সহ বিভিন্ন অজুহাতে ইমন নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। ২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর এভিডেভিডে বিবাহ করেন তারা দুইজন। পরে ১৮ ডিসেম্বর এফিডেভিটের মাধ্যমে হিন্দুধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ইমন সরকার। এরপরে স্বামী—স্ত্রী’র সম্পর্কে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো তারা। সেখানেই শারিরিক মেলামেশায় যখন তানিয়া তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখন সামাজিকভাবে স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবী করলে রাজি নন ইমন। সেসময় প্রথম স্ত্রী ও ঘরে থাকা সন্তানের বিষয়টিও প্রকাশ্যে আসে।
তানিয়ার গর্ভের সন্তানকে মেরে ফেলতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন ইমন। সে মূহুর্তে নিরুপায় হয়ে তানিয়া যখন আইনের আশ্রয় নিতে চান তখনই ইমন মামলার ভয়ে ২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী ইসলামি শরিয়তে ১৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের পরও লোক সমাজে স্ত্রী হিসেবে তানিয়াকে ও দুই মাস বয়সী ছেলে সন্তানটিকেও অস্বীকার করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তানিয়া অভিযোগ করে বলেন,আমি যখন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয় তখন সামাজিকভাবে স্ত্রীর স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বললে তাতে রাজি হয়নি ইমন। সে সব ডকুমেন্টস লুকিয়ে ফেলে এবং আমাকে অস্বীকার করতে শুরু করে তখন আমি নিরুপায় হয়ে আমাদের ব্যক্তিগত কিছু ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেই। সে আমাকে ও আমার গর্ভে জন্ম নেওয়া ছেলে সন্তানকে অস্বীকার করে কুৎসা রটাচ্ছে। হুমকি—ধামকি দিচ্ছে আমাকে সহ আমার সন্তানকে মেরে ফেলবে।
তিনি আরও বলেন,এরই মধ্যে কয়েকদিন আগে আমার বাড়িতে ডিভোর্স পত্র পাঠিয়েছে। আমার সন্তানের ভবিষ্যত কি? এ রকম পরিস্থিতিতে আমার সন্তানের স্বীকৃতি ও সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ও সুস্থ সুন্দর জীবনের জন্য এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত স্বামী ইমন সরকার মুঠোফোনে বলেন,কাগজ পত্রে বাবার নামের স্থানে তো আমারই নাম আছে। সে কেন অভিযোগ করেছে আমি জানি না। এখন আমার সঙ্গে তানিয়ার সম্পর্ক ভালো আছে।
এ প্রসঙ্গে দুর্গাপুর উপজেলার বিরিশিরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রুহু বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ আমাকে জানায়নি ।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)উত্তম চন্দ্র দেব বলেন,কয়েকদিন হল যোগদান করেছি। ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে মেয়েটি যদি আইনের সাহায্য চাইলে সহযোগিতা করবো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন