নেত্রকোনার দুর্গাপুরে শতাধিক মৎস্য চাষীর পুকুর ডুবে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি

টানা তিন দিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার শতাধিক চাষীর পুকুর ডুবে মাছ ভেসে গেছে। উপজেলা মৎস্য খাতে প্রায় ১৮ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মৎস্য অফিস। তাছাড়াও বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য পুকুর ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মানুষ।

(৭ অক্টোবর) সোমবার দুপুরে উপজেলা মৎস্য অফিসার শিরীন আক্তার বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান,উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ১০০ জন মৎস্য চাষীর মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে মৎস্য চাষিদের প্রায় ১৮ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,সোমেশ্বরী ও পাশের নেতাই নদীর পানি প্রবেশ করে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের জাগিরপাড়া, বন্দউষান, মুন্সিপাড়া, আটলা, পূর্বনন্দেরছটি, হাতিমারাকান্দা, ভাদুয়া, নাওধারা, দক্ষিণ জাগিরপাড়া।

অপরদিকে কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বিলকাঁকড়াকান্দা, দৌলতপুর, পলাশগড়া, বংশীপাড়া, গাইমারা, কাকৈরগড়া ইউনিয়নের, গোদারিয়া, বিলাশপুর, লক্ষীপুর, রামবাড়ি, দুর্গাশ্রম এবং চÐিগড় ইউনিয়নের সাতাশি, চারিখাল, নীলাখালী, ফুলপুর এবং বাকলজোড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামসহ ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এসব ইউনিয়নের রাস্তা, মাঠ-ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে, পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, পুকুর তলিয়ে ভেসে গেছে লাখ লাখ টাকার মাছ। অপরদিকে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় জীবনযাপন করছেন।

স্থানীয় মৎস্য চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাখ টাকা খরচ করে তারা মাছ চাষ করেছেন। কিন্তু পানিতে ভেসে গিয়ে সব মাছ। এই ক্ষতি কিভাবে পূরণ হবে তা জানা নেই কারো। ইন্দ্র মোহন দাস নামের এক মৎস্য চাষী বলেন,আমি ৮ লাখ রেনু চাষ করেছিলাম কিন্তু পানিতে সব ভেসে গেছে। আমার আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহযোগিতার আওতায় আনা হবে।

এদিকে সোমেশ্বরী নদীর দুর্গাপুর পয়েন্টে রবিবার সন্ধ্যা ৯টা থেকে সোমবার দুপুর ১২ টা নাগাদ ১৫ ঘণ্টায় ১০০ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। বর্তমানে নদীটির পানি বিপৎসীমার এক দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।