নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

নোবিপ্রবিতে ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে উপাচার্যের মতবিনিময়

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শ্রেণি প্রতিনিধি (সিআর), বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে উপাচার্যের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন অডিটোরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একাডেমিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নোবিপ্রবি মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল।

মতবিনিময়কালে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, আমরা তিন মাস আগে একটি সভা করেছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সিআর, ক্লাবের সদস্য এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসতে পেরে আমি আনন্দিত। আজ আমরা আপনাদের যে সমস্যাসমূহ রয়েছে সেগুলো শুনবো এবং সমাধানের চেষ্টা করবো।

তিনি বলেন, ২৪-এর আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং যারা আহত হয়েছেন তারা যেন দ্রুত সুস্থ হন সে কামনা করছি। আমরা বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করছি। এ জন্য ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলসমূহে ফার্স্ট এইড বক্স আমরা দিয়েছি এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করছি। নতুন কিছু জনবল সেখানে দেয়ার চেষ্টা করছি।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। যারা আন্দোলনে আহত হয়েছেন তাদেরকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে এবং ফয়েজের পরিবারকে ইতোমধ্যে পাঁচ লাখ টাকা দেয়া হয়। ফয়েজের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এছাড়াও মাদক এবং র‌্যাগিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। এ বছর মে-জুন এর মধ্যেই তৃতীয় একাডেমিক বিল্ডিং এর কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করছি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার সমাধানে আমরা আরও কয়েকটি হল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। ক্যাম্পাসকে একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে তৈরির জন্য যা করা প্রয়োজন আমরা সেটা করবো।

এছাড়াও হিট প্রজেক্টের মাধ্যমে আমরা শিক্ষা ও গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নত একটি জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। র‌্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রেও বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা একটি অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই।

এসময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, এরই মধ্যে গবেষণার জন্য আমরা এনিম্যাল রিসার্চ সেন্টার চালু করেছি। ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছি। আমরা বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সঙ্গে কোলাবরেশনের কাজ করছি।

যার মাধ্যমে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে যেনো সঠিক সেবা নিশ্চিত করা যায় এর জন্য তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। মিট দ্যা ভাইস চ্যান্সেলর কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করছি। এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা খুব দ্রুতই ডিজিটাল হাজিরা চালু করবো, যাতে ভবিষ্যতে সুন্দরভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

একই সঙ্গে আগামীতে মেধার ভিত্তিতে শতভাগ স্বচ্ছভাবে শিক্ষার্থীরা যেনো হলে আসন বরাদ্দ পায় তা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়াও আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য হলে ১০ শতাংশ আসন বরাদ্দ রাখা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য আমরা কাজ করে চলেছি। যাতে বাইরে থেকে দর্শনার্থীরা ক্যাম্পাসে আসলে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে। পরিযায়ী পাখিদের জন্য একটি অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়েছে।

এছাড়াও গ্রিন ক্যাম্পাস এবং ক্লিন ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি। বিদ্যুৎ সমস্যা নিরসনে একটি কার্যকর পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করবো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কটি যেনো চার লেনে উন্নীত করা হয় সে জন্য আমরা একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সবাইকে ধন্যবাদ।

প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে মাননীয় উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন ও তাদের মূল্যবান পরামর্শকে সাধুবাদ জানান।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল হক ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ। সভা সঞ্চালন করেন নোবিপ্রবি প্রক্টর এএফএম আরিফুর রহমান। এসময় নোবিপ্রবি বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, হলের প্রভোস্ট, দপ্তর প্রধানসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।