পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ঈদগাহে লোকদেখানো কাজ দেখিয়ে মাটি ভরাট ও বিল ভাউচার করা হয়েছে
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচীর আওতায় একটি ঈদগাহ’র মাটি ভরাট প্রকল্পের লোকদেখানো কাজ দেখিয়ে বিল ভাউচার করা হয়েছে ষোল আনায়। ঘটনাটি উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ফতুয়াপাড়া গ্রামের ঈদগাহ মাঠে ঘটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জানা যায়, ওই ঈদগাহের পশ্চিম পাশের্বর দেওয়াল ও মেহরাব এবং মিম্বার আলাদা বরাদ্দে গত বছরে নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। পরবতর্ী প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দের সর্বসাকুল্যে ৬ থেকে ১০ হাজার টাকার মাটি ভরাটের কাজ করেছেন বলে কথা উঠেছে। একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন প্রকল্পের এমন খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো নক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচীর আওতায় তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের ফতুয়াপাড়া ঈদগাহের মাটি ভরাট প্রকল্পে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাফফর হোসেনকে সভাপতি দেখিয়ে একটি প্রকল্প কমিটি গঠন করা হয়।
এ ব্যপারে দেবনগড় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ছলেমান আলী বলেন, প্রকল্পের কাজটি পূর্বে যে চেয়ারম্যান ছিল তারই বরাদ্দকৃত। সেই প্রকল্পের বরাদ্দকৃত কাজটিই এখন করা হয়েছে। যে কাজটি বর্তমানে হয়েছে এতে ৫ থেকে ৬হাজার টাকার মত ব্যয় হয়েছে জানান তিনি। আপনি কাজ না দেখে কেন বিলে স্বাক্ষর করলেন? প্রশ্নোত্তরে চেয়ারম্যান জানান, ‘আপনি জানেন আমি সেই ধরণের ব্যক্তি নয়। স্বাক্ষর নেয়ার সময় কাজটি দেখার কোন সুযোগ দেয়নি প্রকল্প কমিটির সভাপতি। তিনি আরও বলেন, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হয়ে দায়িত্বপালন করছেন তাই স্বাক্ষর করতে হবে, প্রকল্প কমিটি চাপ প্রয়োগ করেন।’ জানতে পারা যায়- তিনি সই করতে চাইনি তাকে সই করাতে বাধ্য করানো হয়েছে।
প্রকল্প কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য মোজাফফর হোসেন বলেন- চেয়ারম্যানকে কি বলতেছেন? আমিই কাজ করেছি, কি সমস্যা? বরাদ্দের কম টাকায় কাজ হয়েছে তাই বলছিলাম, কথা বলা মাত্রই মোবাইলে রাগানিত হয়ে অপমান জনিত ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন ইউপি সদস্য মোজাফফর। অনেক কথা হওয়ার পর তিনি বলেন, আপনারা সামন্য বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান কেন? এর আগে আরও সাংবাদিক এসেছিলেন তাঁরা তো কোন বলেননি। তাঁর কাজ ভাল হয়েছে পিআইও স্যারও বলেছেন।
ঈদগাহ কমিটির সভাপতি হাজী আব্দুল খালেক জানান, ঈদগাহের মাটি ভরাটের কাজ যা হয়েছেন মোটামুটিভাবে হয়েছে। বরাদ্দকৃত টাকার সামান্য টাকায় কাজটি হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি ফোন কলটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
এনিয়ে তিন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যা মোছাঃ নাছিমা বেগম বলেন, তিনি একদিন কাজটি দেখতে গিয়েছেন কাজ হচ্ছে। পরে কখন কিভাবে কাজ করেছেন তা তিনি বলতে পারছেননা। তবে নতুন বলে তিনি এবিষয়ে তেমন অবগত নই জানিয়েছেন। একজন ইউপি সদস্যা হিসেবে আপনাকে প্রকল্প কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে কিনা? প্রশ্নোত্তরে জানান- তিনি এ বিষয়ে জানেননা, তাকে কমিটিতে রাখছেন কিনা। কিভাবে কমিটি করা হয়েছে সেটিও তিনি জানেননা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ জাকির হোসেন বলেন, দেবনগড় ইউপির ঈদগাহের কাজটি গ্রামীণ অবকাঠামো নক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচীর আওতায় এখান থেকে দেয়া হয়েছে। ৭৫ হাজার টাকার কাজে ৫ হাজার টাকাই খরচ করা হয়নি অবগত আছেন কিনা জানতে চাইলে, তিনি বলেন- কেন? ১০ থেকে ১২/১৩ হাজার টাকার মত টাইলস্ই লেগেছে। মাটি ভরাট আর টাইলসের কাজ করা হচ্ছে। আপনি(সাংবাদিক) মেম্বারের সঙ্গে দেখা করিয়েন বলছেন তিনি। এদিকে ঈদগাহ কমিটির টাকায় টাইলস্ ফিটিং এর কাজ হচ্ছে বলে জানাগেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন