কোনোই ব্যবস্থা নেয়া হয়নি ডিলারের বিরুদ্ধে
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় রাতের আঁধারে টিসিবি’র পণ্য বিক্রি
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় রাতের আঁধারে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র পণ্য বিক্রি করেছে ডিলার লোকমান আলী। সে তেঁতুলিয়া চৌরাস্তা বাজার, তেঁতুলিয়া পঞ্চগড়ের মেসার্স আলিফ ট্রেডার্স নামীয় প্রতিষ্ঠানের ডিলার।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) গভীর রাতে উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখতে ও জানতে পারা যায়, সকাল ৯টা থেকে দুপুর দুুইটা পর্যন্ত টিসিবি পণ্য বিক্রয় করা হয়। পণ্য বিতরণের সময় ডিলারের কাছ থেকে অবৈধভাবে প্রথমে ২৫টি কার্ড উদ্ধার করেন ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল মমিন ও ট্যাগ অফিসার রুবেল হক। পরে দুপুরের দিকে আরোও ১০টি উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে অবৈধভাবে ৩৫টি কার্ড উদ্ধার করেন ইউনিয়ন ট্যাগ টীমের সদস্য। এদিকে ডিলারের অনিয়মের কারণে ৫৩জন টিসিবি কার্ডধারী ব্যক্তি পণ্য ক্রয় করতে পারেননি। ডিলার কার্ডধারী ব্যক্তিকে না দিয়ে একই সঙ্গে একই ব্যক্তিকে ১৯টি টিসিবি’র পণ্য বিক্রি করেছেন। কার্ড ছাড়াই বিক্রি করা হয়েছে অধিকাংশ পণ্য।
জানা যায়, সোমবার (৩ এপ্রিল) টিসিবি’র পণ্য ওই ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসা হলে দিবাগত রাতেই প্রতিটি কার্ডের জন্য চিনি ১ কেজি, ডাল ২ কেজি ও ছোলা ১ কেজি পরিমাপ করে পলিথিনে প্যাকেট করা হয়। রাত যখন ১টা ২০মিনিট তখন দ্বীপ ট্রেডার্স এর প্রোপাইটর প্রদিপ কুমার রায়ের প্রাইভেট কারের মাধ্যমে টিসিবি’র মালামাল অন্যত্রে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন আবারও ওই প্রদিপ কুমার রায়ের প্রাইভেট কার সকাল ৯টার আগেই পরিষদ চত্বরে এসেছিলেন বলে জানা গেছে।
ডিলার লোকমান আলী বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এটা কিছুই না, কার্ডের মাল ১০টা আপনার এলাকার প্রদিপ এখান থেকে ৫টা মাল নিয়েছে। আপনার কাছ থেকে যে কার্ড গুলো পেয়েছে সেগুলো কিভাবে আসলো জানতে চাইলে বলেন, আমার কাছে পণ্য নিতে আসা কোন এক ব্যক্তির হাতে নতুন কার্ড মনে হওয়ার আমি ট্যাক টীমকে দেখতে বলেছি। ভাই আমি ব্যস্ত আছি অন্য সময় কথা বলব বলেই ফোনে কথা বলা বিচ্ছিন্ন করে দেয়।’
এদিকে এ বিষয়ে জানার জন্য কালিয়া মনি, দেবনগড়, তেঁতুলিয়া পঞ্চগড়ের দ্বীপ ট্রেডার্স নামীয় প্রতিষ্ঠানের ডিলার প্রদিপ কুমারকে রাত ৮টা ও ৯টা নাগাদ মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে ফোনটি রিসিভ করেননি।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ট্যাগ টীমের আহবায়ক মোঃ ছলেমান আলী বলেন, আমরা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে জানতে পারি সোমবার দিবাগত রাত যখন ১টা ২০মিনিট তখন প্রদিপ কুমার রায়ের প্রাইভেট কারে ডিলার লোকমান টিসিবির পণ্য অন্যত্র বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যান। পরের দিন সকাল ৯টার আগেও প্রদিপ কুমারের গাড়ি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা ডিলারের কাছ থেকে ৩৫টি কার্ড পেয়েছি। আমি মৌখিকভাবে ইউএনও মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করেছি। এইসব কার্ডগুলো ইউএনও মহোদয় রেখে দিতে বলেছেন। ডিলারের সবকিছু টাকা আপাতত আমার জিম্মায় আছে। ৫৩টি টিসিবি কার্ডের পণ্য ক্রয় করে দিতে চেয়েছেন। টিসিবি পণ্য ক্রয় করে দেয়ার পর তার সমস্ত টাকা ফেরত দেয়া হবে। এতো বড় অন্যায়ের কাজ আপনি ডিলারকে ছাড়িয়ে দিলেন কেন? এমন জিজ্ঞাসায় তিনি বলেন, ‘আমি এতো কিছু বুঝতে পারিনি।’
এ বিষয়ে ট্যাগ টীমের সদস্য সচিব মোঃ রুবেল হক বলেন, ‘প্রদিপ কুমার নিজেও একজন ডিলার সে এভাবে নিতে পারেনা। যা হোক তদন্ত সাপেক্ষে এর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিলার লোকমানের বিষয়টি চেয়ারম্যানকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে তিনিই এর ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।’
এ ব্যাপারে জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহার মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে ফোন কলটি রিসিভ হয়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন