পঞ্চগড়ের বোদায় গড়ে উঠেছে দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টা বাগান
যতদুর চোখ যায় দেখা মেলে সুবিস্তৃত সারি সারি মালটা গাছ। এতবড় মালটা বাগান এর আগে কখনো দেখেনি এদেশের মানুষ। দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বোদায় উপজেলায় সম্প্রতি গড়ে উঠেছে দেশের সর্ববৃহত মাল্টা বাগানটি। সমতল ভূমিতে চা চাষে সফলতার পর বাণিজ্যিক ভাবে মাল্টা চাষেও এসেছে সফলতা। উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের টেকরাপাড়ায় সৈয়দ মাহফুজুর রহমান সেলিম ৬০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন দেশসেরা এ মাল্টা বাগানটি। বাগানটি গড়ে উঠায় সৃস্টি হয়েছে কর্মসংস্থান।
এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টা বাগান, লেবু ফসলের স¤প্রসারন ব্যবস্থপনা প্রকল্পের আওতায় উৎপাদন বৃদ্ধি লক্ষ্যে মাল্টা চাষে কৃষক উদ্বদ্ধ করা হচ্ছে এবং কৃষকদের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতাও করা হচ্ছে।
দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বেংহারী ইউনিয়নের টেকরাপাড়া এলাকায়। প্রায় দুই বছর আগে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার এক ব্যবসায়ী সৈয়দ মাহফুজুর রহমান সেলিম ৬০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে এ বাগানটি গড়ে তোলেন। সাত হাজার চার’শ গাছের এ মাল্টা বাগানটিতে এপর্যন্ত তার ব্যায় হয়েছে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। কেবল শুধু মাল্টায় নয়, একই বাগানে মাল্টার পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে প্রায় দুই হাজার পেঁপে গাছ লাগিয়ে সাড়া জাগিয়েছেন এলাকায়। সঠিক ভাবে ফলন আসলে একই বাগান থেকে দ্বিগুন মুনাফার আশা করছেন তিনি। তবে এ বছরে তার বাগানে কিছু গাছে মাল্টার ফলন ধরলেও আগামী বছরে অন্যান্য বাগানের মত ফুলে, ফলে ভড়ে যাবে এমনটি আশা করছেন তিনি। তবে সাথী ফসল হিসেবে পেঁপে প্রতিটি গাছে গাছে ভরপুর। এক একটি পেঁপেঁর ওজন দুই থেকে তিন কেজি। তবে সব ঠিক থাকলে এ বাগান থেকে মাল্টা ও সাথী ফসল পেঁপে বিক্রি করে প্রতি বছরে ৮৫ হাজার থেকে ১ কোটি টাকা আয়ের আশা করছেন তিনি। আর এ বাগানটি গড়ে উঠায় দূর হচ্ছে এলাকার বেকারত্ব, বাগান পরিচর্যার শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন আড়াই তিন’শ টাকা আয় রোজগার করে ছেলে মেয়ের লেখা পড়াসহ সংসারের খরচ যোগান হচ্ছে- এমনি ভাবে এই বাগানে কাজ করে শতাধিক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছেন। উদ্দ্যোক্তা সৈয়দ মাহফুজুর রহমান সেলিম মাল্টার পাশাপাশি বাড়তি লাভের আশায় সাথী ফসল হিসেবে একই সাথে চাষ করছেন, পেঁপেঁ, কমলা। তবে মাল্টা উৎপাদন খরজের ব্যয় যোগান দিতে আয়ের উৎস ও সহযোগি হিসেবে পেঁপেঁ চাষ করা হচ্ছে। তবে এবছরে মাল্টা থেকে আয় না হলেও পেঁপেঁ থেকে ২৫-৩০ লক্ষ টাকা আয় হতে পারে। সব ঠিক ঠাক থাকলে আগামী বছর থেকে ফলন বিক্রি করে প্রায় ১ কোটি টাকা আসবে বলে ধারণা করছেন বাগান মালিক।
বেংহারী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আবু জানান- দেশের সর্ববৃহৎ মাল্টা বাগানটি তাঁর এলাকায় হওয়ায় প্রশংসা করে বলেন, দেশে এত বড় বাগান আর কোথাও নেই, বাগানটি সংরক্ষণ ও আরও স¤প্রসারনে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
বোদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন-অর-রশিদ জানান, এটা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ মাল্টা বাগান, ৬০ বিঘা জমির উপরে বাগানটি গড়ে তোলা হয়েছে। এটি ছাড়াও জেলায় মোট ৮৫ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হলেও এর মধ্যে বোদা উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে ছোট বড় আরও বেশ কয়েকটি মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে। প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১’শ টাকায়, লেবু ফসলের স¤প্রসারন ব্যবস্থপনা প্রকল্পের আওতায় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কৃষকদের মাল্টা চাষে উদ্বদ্ধ করাসহ তাদের পাশে থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন