পর্যটকশূন্য রাঙামাটি, তাঁত ব্যবসায়ীদের লোকসানের আশঙ্কা

রাঙামাটিতে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি পর্যটকদের চাহিদার কারণে শহরে গড়ে ওঠেছে স্থানীয় তাঁতের তৈরি পোশাকের শতাধিক দোকান।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করার প্রভাবে জেলা পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। মৌসুমেও ক্রেতাশূন্য তাঁত পণ্যের দোকানগুলো।

মনোরম হ্রদ, পাহাড় আর মেঘের মিতালি উপভোগ করতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে পার্বত্য জেলা রাঙামাটি। প্রকৃতির পাশাপাশি পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় থাকে স্থানীয় তাঁতের তৈরি পোশাক।

রাঙামাটির সব থেকে বড় টেক্সটাইল মার্কেটে ছোটবড়ো মিলে প্রায় ৩৫-৪০টি দোকান রয়েছে। দোকানগুলোতে রয়েছে বাহারি সব পণ্য। বাহারি রঙের বিভিন্ন সাইজের শার্ট, ফতুয়া, পাঞ্জাবি বা পিনন খাদিতে শোভা পাচ্ছে প্রতিটি শোরুম। এছাড়াও ব্যাগ, বাঁশ-বেতের শো পিসতো আছেই।

ব্যবসার অচলাবস্থা নিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, বেকার বসে আছি। পর্যটক নেই তো বেচা-বিক্রি নেই। আমাদের কাছে এক টাকাও পুঁজি নেই। এ মৌসুমে আমাদের ব্যবসা জমে উঠার কথা। বর্তমানে ব্যবসা একদমই চলছে না। বেচাকেনা একদমই নেই। অনেক কর্মচারী ছুটিতে চলে গেছেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ বিল, দোকান ভাড়া পুঁজি থেকে খরচ হচ্ছে। এইভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা গুটিয়ে যাবে। এজন্য ঐতিহ্যবাহী এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে অতি সত্তর এ জেলায় পর্যটকদের আসার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানান প্রশাসনের প্রতি।

রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, পর্যটকদের ওপর ভিত্তি করে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। সৃষ্ট রাজনৈতিক জটিলতার কারণে এখানকার পর্যটক নির্ভর ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনছেন।

তিনি বলেন, এখানকার তাঁত ব্যবসা টিকে আছে পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে। পর্যটক না থাকলে এ ব্যবসার কোনো ভিত্তি নেই। বর্তমানে পর্যটক না থাকায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, কর্মচারী, তাঁতিরা চরম কষ্টে জীবন পার করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে পর্যটকদের যাতায়াত শুরু হলে আবারও ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে প্রত্যাশা।