পশ্চিমবঙ্গের একই জেলায় ‘বাবরি মসজিদ’ ও রাম মন্দির গড়তে চায় তৃণমূল – বিজেপি
বাংলাদেশ নিয়ে নানাবিধ আলোচনা, সমালোচনা ও প্রতিবাদের মধ্যেই হঠাৎ তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ‘ঘোষণা’ করেন- এবার পশ্চিমবঙ্গে ‘বাবরি মসজিদ’ তৈরি করা হবে!এমন মন্তব্যে স্বভাবতই রাজ্য রাজনীতির পারদ চড়তে শুরু করে। এমনকী, একাধিক সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে বহু মানুষকে নানা প্রশ্ন তুলতেও দেখা যায়।
এ প্রেক্ষাপটেই এবার বিজেপি ‘ঘোষণা’ করল- তারা পশ্চিমবঙ্গে রাম মন্দির নির্মাণ করবে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, শুক্রবার বিজেপির পক্ষ থেকে এ ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের বক্তব্য- অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গে রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এর আগে পশ্চিমবঙ্গে বাবরি মসজিদ নির্মাণ ইস্যুতে প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছিল হুমায়ুন কবীরের গলায়। তার বক্তব্য ছিল, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩০ বছর পর আবার তা গড়ে তোলা হবে।
যদিও বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল দলের এই পদক্ষেপের ব্যাখ্যাটা একটু অন্যরকমভাবে দিয়েছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়া তাকে উদ্ধৃত করে লেখেছে, ‘মসজিদ গড়া হবে বলে তার পালটা রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে, বিষয়টা এমন হওয়া উচিত নয়। বাবরি মসজিদ নির্মিত হতেই পারে। রাম মন্দিরও তৈরি করা যেতে পারে।’
অগ্নিমিত্রার আরও অভিযোগ, ‘যিনি বলছেন- বাবরি মসজিদ তৈরি করা হবে, সেই একই ব্যক্তি বলেছিলেন, হিন্দুদের গণহত্যা করা হবে এবং ভাগীরথীর পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। এমন মন্তব্য করার জন্য তাকে কোনো শোকজ নোটিশ ধরানো হয়নি।’
সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করার জন্য অগ্নিমিত্রা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই মন্তব্যের আড়ালে আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। তিনি তার ভোট ব্যাংক অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য আরও একটা বাংলাদেশ তৈরি করতে চাইছেন। রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে। আমরা অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের বর্ষপূর্তি পালন করব। বহরপুরে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।’
এদিকে, বাংলায় বাবরি মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বাবরি মসজিদ মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত আবেগের একটি বিষয়। আমরা সবাই জানি- ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল। ৩০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, এখনো বাবরি মসজিদ পুনরায় নির্মাণ করা হল না।’
‘২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মতভাবে একটি রায় ঘোষণা করেছিল। মসজিদ নির্মাণ করার জন্য ৫ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে তা নিশ্চয় গড়ে তোলা হবে।’
এরই সঙ্গে হুমায়ুন আরও বলেন, ‘বাংলায়, বিশেষ করে মুর্শিদাবাদে একটি নতুন বাবরি মসজিদ গড়া নিয়ে অনেকে বলছেন, এতে নাকি মানুষকে উত্তেজিত করা হবে। কিন্তু, এমন কোনো ব্যাপার নয়। ওখানে কোনো সমস্যা নেই। আর বাবরি মসজিদের জমি নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে, যদি প্রশ্ন করা হয়, কোথায় জমি কেনা হবে, তাহলে আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই – আমরা বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে কোনো জমি চেয়ে আবেদন করিনি। না, আমাদের কোনো সরকারি জমি বা কোনো সরকারি অনুদান নেওয়ার পরিকল্পনা নেই।’
অন্যদিকে, হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে বাংলাদেশিদের সঙ্গে জড়িত থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, তার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, সীমান্ত পাহারা দেওয়া কেন্দ্রের দায়িত্ব। তৃণমূল নেতা আরও জানান, তিনি অন্তত সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো অশান্তির সম্ভাবনা দেখেননি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন