পশ্চিমবঙ্গে আচমকা ফ্লাইওভার ধসে নিহত ৫, আহত ২৫

মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের কলকাতার মাঝেরহাট ব্রিজ আচমকা ধসে পড়ে কমপক্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আনন্দবাজার পত্রিকা।

খবরের ওয়েবসাইট ফার্স্ট পোস্ট জানায় ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে আহত ২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ব্রিজের নিচে এখনও মানুষ আটকে রয়েছে বলে আনন্দবাজারের খবরে বলা হলেও তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দুর্ঘটনার সময় কলকাতার দক্ষিণে শহরতলির এই গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত সেতুটির উপর অনেক যানবাহন ছিল।

ঘটনার পর দেখা যায়, বেশ কয়েকটি রক্তাক্ত দেহ এবং ভাঙাচোরা গাড়ি সেখানে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকাজে নামে দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল।

পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সেনাবাহিনীও উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে।

উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থল থেকে ৯ জনকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সিএমআরআই-এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ১০ জনকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ প্রবল আওয়াজে সেতুর মাঝের অংশ ভেঙে পড়ে। সেতুর উপরে থাকা যানবাহনগুলি ছিটকে পড়ে। বাস, গাড়ি ও বাইকের আরোহীরা এসময় গুরুতর আহত হন।

আনন্দবাজার জানায়, দুর্ঘটনার সময় কয়েকজন শ্রমিক ওই ব্রিজে কাজ করছিলেন। ব্রিজের নীচে মেরামত সংস্থার কর্মীদের অস্থায়ী থাকার জায়গা ছিল বলেও দাবি করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সেখানেও কেউ চাপা পড়ে রয়েছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

দুর্ঘটনার পর থেকে খিদিরপুর ও বেহালার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছেন, এটা ৪০ বছরের পুরনো সেতু। এখনও পর্যন্ত তার কাছে মৃত্যুর কোনও খবর নেই। যারা আটকে ছিলেন, তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

বিজেপি নেতা মুকুল রায় মন্তব্য করেছেন, ‘এই ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকার দায়ী। তিনি শহরের সৌন্দর্যায়নের কথা বলছেন, অথচ পুরনো সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে কোনও নজর নেই।’

ব্রিজের নীচেও কেউ চাপা পড়ে রয়েছেন কি না তা স্পষ্ট নয়।

এই ব্রিজের নীচ দিয়ে রেললাইন গিয়েছে। একটি লোকাল ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল থেকে অল্প দূরেই ছিল। সেতুর যে অংশ ভেঙে পড়েছে, ট্রেনটি তার নীচে থাকলে আরও বেশি প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বজবজ-মাঝেরহাট লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ।

আড়াই বছর আগেই পোস্তায় ভেঙে পড়েছিল সেতু। সেই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৭ জনের। আহত হয়েছিলেন অন্তত ৮০ জন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে দার্জিলিঙ সফরে আছেন। সেখান থেকেই তিনি উদ্ধার এবং আহতদের চিকিত্সার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সন্ধ্যাবেলায় ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।