পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পাপড় বিক্রি!

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের পরিবেশ দিন দিন ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা, তেলাপোকা, বিড়ালের উৎপাতে অতিষ্ঠ রোগী ও রোগীর আত্মীয় স্বজনরা। এই হাসপাতালে নতুন করে যোগ হয়েছে হাকারদের উৎপাত! হাসপাতালে চিকিৎসক নার্সদের চোখের সামনে পাপড় বিক্রি করলেও কেউ যেনোদেখে না দেখার চোখেই দেখছে না।

পাবনা জেলায় গত কয়েকদিনে করোনা রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মাসে করোনা পরীক্ষায় পজেটিভের সংখ্যা তিন গুণেরও বেশি। এদিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডের প্রবেশ মুখে আবর্জনা ও টয়লেটের নোংরা দেখা যায় বলে অভিযোগ করেন রোগীরা।
বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা নমুনা সংগ্রহের পাশে মেডিসিন ওয়ার্ড আর তার পাশেই করোনা রোগীর জন্য ৪০ শয্যার একটি কক্ষ রয়েছে। করোনা সন্দেহভাজন রোগীর সঙ্গে স্বজনরা এসে আবার দেখাও করছেন। কোন রকম সাবধানতা নেই বললেই চলে।

এছাড়া হাসপাতালের সাধারণ রোগীদের ওয়ার্ডে রয়েছে ব্যাপক তেলাপোকার উৎপাত। বিপুল সংখ্যক বিড়ালের অত্যাচারেও অতিষ্ঠ রোগী ও রোগীর স্বজনরা। মশারও উপদ্রপ ব্যাপক ভাবে লক্ষণীয়। শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক শিশুর অভিভাবক আব্দুল মতিন বলেন, বাচ্চাদের তেলাপোকা কামড়ায়। নিজেরা জেগে থেকেও রেহাই মেলে না। ডাক্তারদের বারবার বলার পরও কোনো সুফল নেই। রাতে মশার অত্যাচারে টেকা দায়।

হাসপাতালের একপাশেই স্তুপ করে ফেলা রাখা হয়েছে সিরিঞ্জ, সুচ সহ বিভিন্ন সার্জিক্যাল কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম। হাসপাতালে রোগী ভর্তির পরে রোগীদের ঔষধ পত্রও ঠিকমত বিতরণ না করার অভিযোগ করেন রোগী ও স্বজনরা। জটিল শিশু রোগী ও বয়স্ক রাগীদের ওয়ার্ডে সারাদিনে একবার শুধু ডাক্তার রাউন্ড দিয়ে থাকেন বলেও জানা গেছে।

কোন রোগীর অবস্থা জটিল হলেও কোন ডাক্তারকে ডাকলে রোগীর নিকট আসেন না বলেও অভিযোগ।

মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রাকিবুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে দেখছি প্রতিদিন ওয়ার্ডের ভেতরে ঢুকে হকাররা বাদাম, পাপড় বিক্রি করে। এটা কিভাবে সম্ভব হয় বুঝতে পারি না। এক অরাজক পরিবেশ বিরাজ করছে। যেন দেখার কেউ নেই।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. একেএম আবু জাফর বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করেছি বহিরাগত মানুষদের আনাগোনা বন্ধ করতে। হাসপাতালের ভেতরে, ওয়ার্ডে হকারদের অবাধ যাতায়াত বন্ধ করতে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ ও চেষ্টা প্রয়োজন। কারণ হাসপাতালের চারপাশের অনেক মানুষের জীবন জীবিকা জড়িত হাসপাতালের সাথে। এছাড়া ওয়ার্ড পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে সবসময় চেষ্টা করা হয়। লোকবলও কম। সমস্যা হচ্ছে একজন রোগীর সাথে ৪/৫ জন লোক থাকে। তারাও সচেতন নয়। সবমিলিয়ে অনেক চেষ্টাই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না।