পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পরকিয়ার জেরে স্ত্রীকে তালাক দিলেন স্বামী

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় পরকিয়ার জেরে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্ত্রী সংসার করতে না চাইলেও চাকুরির সুবাদে এতদিন চুপ ছিলেন সেনা সদস্য (স্টাফ) আবু তালেব।অতঃপর অবসরে গিয়ে ১ম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ২য় বিবাহ করেন তিনি।এ ঘটনায় ১ম স্ত্রী আবু তালেবের বিরুদ্ধে পারিবারিক আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।এ বছরের ২৯ আগস্ট মামলাটি দায়ের করা হয়।

আবু তালেব মঠবাড়িয়া সদর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আন্ধারমানিক গ্রামের মৃত কাজেম আলী সরদারের ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার ইউনাইটেড পার্ক এলাকায় আবু তালেব তার ১ম স্ত্রী মিনারার নামে ২০ লক্ষ টাকায় চুক্তিভিত্তিক (বন্ধক) একটি ফ্লাট রাখেন।এরপর তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে এখানেই থাকেন মিনারা।পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ার পর ছোটবেলা থেকেই দুই ছেলেকে ফ্লাট থেকে বাবার সরকারি কোয়ার্টারে থাকার জন্য পাঠিয়ে দেয় মা।

চাকুরী জীবনে আবু তালেব যশোর, বগুড়া, ঘাটাইল,র‍্যাব সিরাজগঞ্জ সহ বিভিন্ন জায়গায় পোস্টিং হলেও স্ত্রী ঢাকার ফ্লাটেই থাকতেন।তবুও স্ত্রীর নিকট রীতিমতো টাকা পয়সা পাঠাতেন তিনি।এমনকি ২০১০ সালে আইভরি কোস্ট মিশন থেকে প্রাপ্ত ১০ লক্ষ টাকাও স্ত্রীকে দেন তিনি।

২০২০ সালের জুলাইতে অবসরে গিয়ে গ্রামের বাড়ি আন্ধারমানিক ছুটে আসেন আবু তালেব।ঘর বাড়ি তৈরি করে বাকি জীবনটা এখানেই কাটাতে চান তিনি।

আবু তালেব অবসরে গিয়ে পেনশনের টাকা ভাগ করে দেন ছেলে মেয়েকে।ইডেন কলেজ পুড়ুয়া মেয়ের লেখাপড়ার খরচ সহ ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর এককালীন ২ লক্ষ টাকা প্রদান করেন তিনি।বড় ছেলেকে কাতার পাঠাতে ৩ লক্ষ টাকা, জাগরনি ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে দেড় লক্ষ টাকা এবং চলতি বছরের মার্চ মাসে দেওয়া হয় ৩ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা। সরকারি চাকুরিরত ছোট ছেলেকে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রাপ্ত পেনশন ভাগাভাগী করেন সেনাবাহিনীর চতুর্থ শ্রেনীর এই কর্মচারী।বাকি টাকা দিয়ে গ্রামের বাড়িতে একটি বাড়ি তৈরি করেন তিনি।

আবু তালেবের পরিশ্রমের ফসলে পরিবারের সদস্যরা সুখী হলেও ভাল নেই আবু তালেব।বড় ছেলের সাথে বিরোধ আর ১ম স্ত্রীর মামলায় এখন অনেকটা দিশেহারা তিনি।মামলার প্রতি তারিখে তাকে ঢাকায় যেতে হবে আদালতে হাজিরা দিতে।সাথে বয়ে বেড়াতে হবে দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়ার ক্লান্তি। জীবনের পড়ন্ত বেলায় কান্না জড়িত কন্ঠে গণমাধ্যমকর্মীদের এমনটাই বলেন তিনি। তবে এ ব্যাপারে তার ১ম স্ত্রীর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।