পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় উপজেলায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ঊর্মি ভৌমিকের বিরুদ্ধে। সরকারী দায়িত্ব পালনের নামে বিভিন্ন প্রকল্প এবং সেবামূলক কার্যক্রম থেকে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য গৃহ নির্মানের লক্ষ্যে ২০২১-২২ অর্থ বছরে মঠবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে জমি ক্রয় করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে এ জমি ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। জমি ক্রয়ের আগে জমির মালিকদের অফিসে ডেকে স্থানীয় মূল্যে জমির দাম নির্ধারণ করেন তিনি। কিন্তু জমির মালিকদের নামে বরাদ্দ করা হয় নির্ধারিত দামের ৩/৪ গুন টাকা । জমির মালিককে ক্রস চেক দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে অফিসে আসতে বলেন ইউএনও ঊর্মি ভৌমিক।এরপর দর দাম ঠিক করা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমান টাকা জমির মালিককে দিয়ে অতিরিক্ত টাকা রেখে দেন তিনি।
সাপলেজা ইউনিয়নের পূর্ব সাপলেজা গ্রামে জমির মালিকের নামে চেক আসে ২৮ লাখ ৯১ হাজার টাকা। এখান থেকে ফেরত নেওয়া হয় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। চড়কগাছিয়া গ্রামে ১০০ শতাংশ ক্রয়কৃত জমির স্থানীয় মূল্য ১৪/১৫ লাখ টাকা হলেও জমির মালিকের নামে চেক ইস্যু করা হয় ৪০ লাখ টাকা। যা স্থানীয় মূল্যের চেয়ে অনেক বেশী। মঠবাড়িয়া গ্রোথ সেন্টারের কাছাকাছি ওই একই পরিমান জমি ওই একই টাকায় ক্রয় করার সুযোগ থাকলেও তা না কিনে ব্যক্তি স্বার্থে প্রত্যান্ত এলাকার জমি কম দামে ক্রয় করে বেশী দাম দেখিয়ে সরকারী টাকা অপচয় ও আত্মসাৎ করেছেন এই কর্মকর্তা।
তুষখালী ইউনিয়নের তুষখালী কলেজের পাশে ৫১ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয় ৫০ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। জমির মালিককে ওই টাকার চেক দিয়ে ইউএনও ফেরত নেয় ৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখালী গ্রামে ১২০ শতক জমি ক্রয় করা হয়েছে ৭২ লাখ টাকায় । প্রতি শতাংশ ৬০ হাজার টাকা। অথচ এর পাশেই একই অর্থ বছরে বিদ্যুৎ অফিস ক্রয় করেছে প্রতি শতাংশ ২০ হাজার টাকায়।
ইতোপূর্বে আশ্রয়ন প্রকল্প নিয়ে অভিযোগ উঠলেও তার কোন প্রতিকার না হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় একাধিক প্রকল্পের কাজে অসংগতিসহ নানা অভিযোগে জড়িয়ে পড়ছেন ইউএনও ঊর্মি ভৌমিক।
আন্ধারমানিক এলাকায় মুসলিম কবরস্থানে থাকা খাস জমিতে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ করে সাধারন মানুষের কাছে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন ইউএনও ঊর্মি ভৌমিক। পারিবারিক ওই কবরস্থান নিয়ে স্থানীয়রা ইউএনওকে ধর্মীয় এবং মানবিক দিক বিবেচনা করার জন্য একাধিকবার আলোচনায় বসেও কোন লাভ হয়নি। উপরন্তু তাদের নামে থানায় জিডি করা হয়েছে।
মঠবাড়িয়ায় অবৈধ ইটপাঁজা মালিকদের আচরন দেখে মনে হয় – এখানে সরকারী কোন নিয়ম চলে না,চলে ইট পাঁজা মালিকদের নিজস্ব আইন। রাস্তার ধারে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে এসব পাঁজা তৈরি করা হলেও দেখেও না দেখার ভান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন পাঁজা মালিক বলেন,ইউএনও অফিস ম্যানেজ করেই এগুলো চালাতে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঊর্মি ভৌমিক জানান, জমির মালিকদের নামে ইস্যুকৃত চেক থেকে যে টাকা ফেরত নেওয়া হয়েছে তা ওই জমিতে বালু ভরাটের কাজে ব্যয় করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন