পুলিশ সদরে বৈঠক করেছে ভারতের তদন্ত সংস্থা এনআইএ
জঙ্গি নেতা সোহেল মাহফুজকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঢাকায় এসেছে ভারতীয় জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। ইতোমধ্যে পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে এনআইএ কর্মকর্তারা। পুলিশ সদর দফতরে সোমবার বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এ বৈঠক হয়।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারিতে হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী জঙ্গি নেতা সোহেল মাহফুজ। সোহেল মাহফুজ বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল আসামি। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের প্রথম জেএমবির সদস্য, যিনি বোমা বানানোর তালিম দেন। মূলত তাকেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঢাকায় এসেছে এনআইএর তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। এনআইএর আইজি সঞ্জীব সিংয়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম রোববার রাতেই ঢাকায় পৌঁছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (গোপনীয় শাখা) মনিরুজ্জামান বলেন, হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলায় গ্রেনেড সরবরাহকারী নব্য জেএমবির সোহেল মাহফুজকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তারা। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
‘বাংলাদেশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তাদের কাছে সোহেল মাহফুজকে কলকাতায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানাবে এনআইএ’ ভারতীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের পর জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের খাগড়াগড়ে বাংলাদেশের জেএমবির ঘাঁটিতে বোমা বিস্ফোরণে মোস্ট ওয়ানটেড নাসিরুল্লাহ ওরফে হাতকাটা নাসিরুল্লাহ। ঢাকার গোয়েন্দাদের কাছে এই নাসিরুল্লাহ সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ নামে পরিচিত। গত ৬ জুলাই বাংলাদেশে উত্তরবঙ্গের চাঁপাইনবাবগঞ্জে গ্রেফতারকৃত হাতকাটা সোহেল মাহফুজই এই নাসিরউল্লাহ।
নব্য জেএমবির মিলিটারি শাখার প্রধান সোহেল মাহফুজকে সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার একটি আম বাগান থেকে গ্রেফতার করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও বাংলাদেশের রাজশাহী সীমান্ত এলাকায় দীর্ঘদিন পালিয়েছিলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের ভূমি ব্যবহার করে বাংলাদেশে সরকার উৎখাত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল পেতেছিল জেএমবি। ভারতের মাটিতে বসবাস করে জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তৎপরতা নিয়েও এনআইএ জানতে চাইবে।
২০১৪ সালের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম আসামি সোহেল মাহফুজের মাথার দাম ১০ লাখ টাকা ধার্য করেছিল এনআইএ। তিনি এক সময় জেএমবি সংগঠনের ভারতীয় শাখার আমির (প্রধান) ছিলেন। পরে নব্য জেএমবিতে যোগ দিয়ে দ্রুত সংগঠনের শীর্ষ নেতা বনে যান।
২০০৬ সালে সোহেল মাহফুজ ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর আবার বাংলাদেশে চলে আসেন। গুলশানের হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেড নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তৈরি। ইমপ্রোভাইসড হ্যান্ড গ্রেনেড তৈরির মূল কারিগর ছিলেন সোহেল মাহফুজ। এ ছাড়া নব্য জেএমবির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তিনি।
এর আগে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ময়মনসিংহ আদালতে নেয়ার পথে হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা সালাউদ্দিন ও সালেহীনসহ তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় সোহেল মাহফুজ মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন বলে দাবি পুলিশের।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন