পূর্বাচলের ক্ষতিগ্রস্তরা পেলেন আরো ১৪৪০ প্লট, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকার আরো ১ হাজার ৪৪০ জন সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল অধিবাসীকে ০৩ (তিন) কাঠা আয়তনের একটি করে প্লটের বরাদ্দপত্র বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার সকাল সাড়ে দশটায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তাদের হাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বরাদ্দপত্র তুলে দেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি।
এসময় গণভবন থেকে জুম অ্যাপের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
এ নিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল অধিবাসী কোটায় প্লটের বরাদ্দপত্র বুঝে পেলেন মোট ৭৮৮২ জন। নতুন করে প্লট প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার ১০০ জন মূল অধিবাসী এবং গাজীপুর জেলার ৪৪১ জন সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ও ৮৯৯ জন মূল অধিবাসী। প্লট প্রাপ্তদের নামের তালিকা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর ওয়েবসাইট www.rajuk.gov.bd এ পাওয়া যাবে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ০১/২০২১তম বোর্ডসভায় পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকার নারায়নগঞ্জ অংশের মূল অধিবাসী ক্যাটাগরীতে ২২৪ জন আবেদনকারীর মধ্যে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক বৈধ হিসেবে বিবেচিত ১০০ জন, গাজীপুর অংশে মূল অধিবাসী ক্যাটাগরীতে ১৮৬০ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৮৯৯ এবংগাজীপুর সাধারন ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাটাগরীতে ১৪৭০ জন আবেদনকারীর মধ্যে ৪৪১ জনকে বৈধ হিসেবে বিবেচনা করে প্রত্যেককে একটি করে ০৩ (তিন) কাঠা আয়তনের প্লটের সাময়িক বারাদ্দ প্রদানের সুপারিশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মাননীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন এমপি।
উল্লেখ্য যে রাজধানী শহর ঢাকার ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ সামলানো ও এর বাসযোগ্যতা বজায় রাখার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কাজ শুরু করে। প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৯৬-২০০৯ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ৬২২৭.৩৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ অধিগ্রহণের ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ আশ্রয়হীন/ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। আশ্রয়হীন/ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ তাদের যথাযোগ্য পুনর্বাসনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে তীব্র দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় যা এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এসময় প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে স্থানীয় অধিবাসীদের সংঘর্ষে একজন প্রাণ হারান। ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে।
তৎপ্রেক্ষিতে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদের মাননীয় বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে তিনি ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে আন্দোলনকারীদের উপযুক্ত পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকার গঠন করে এবং শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর পরই তিনি তার প্রতিশ্রুতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে জোর তৎপরতা শুরু করেন। ইতোপূর্বে সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল অধিবাসী হিসেবে প্রকল্প এলাকায় প্রত্যেককে ০৩ (তিন) কাঠা আয়তনের প্লট বরাদ্দ দিয়ে ৬৪৪২ জনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
রবিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে অবশিষ্ট ১৪৪০ জন মূল অধিবাসী ও ক্ষতিগ্রস্তকে প্লটের বরাদ্দপত্র প্রদানের মাধ্যমে মোট ৭৮৮২ জনকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে তার সেই প্রতিশ্রুতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলো।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার রেজাউল করিম সিদ্দিকী প্রেরিত এক তথ্যবিবরণী বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন