পৃথিবীর বেশিরভাগ কুয়া গোলাকার কেন হয়?

পানির অপর নাম জীবন। আর এই পানি সংগ্রহের এক অতি প্রাচীন স্থান কুয়া। শত শত বছর ধরে জলধারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে কুয়ার পদ্ধতি। এবার আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে এই কূপ বর্গাকার, ষড়ভুজ বা ত্রিভুজাকার না হয়ে বৃত্তাকার বা গোলাকার কেন হলো?

মাটি খনন করে আগে তৈরি করা হতো এই পানির কূপ। শহরের প্রাচীন কিছু বাড়িতে ও গ্রামাঞ্চলে গেলে এখনও অনেক বাড়িতেই দেখা যাবে সেই বাড়ির যাবতীয় কাজ করা হচ্ছে এই কুয়ার পানিতে।

এই নির্দিষ্ট আকারের পেছনে রয়েছে বড় রহস্য। কুয়ার গোলাকৃতির পেছনে থাকা সেই আশ্চর্য কারণ অনেকেরই কিন্তু অজানা। আর সেখানেই কারণে লুকিয়ে আছে বিজ্ঞান।

প্রকৃতপক্ষে, সারাবিশ্বে নির্মিত গোলাকার কূপগুলি অন্যান্য কূপের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো একটি গোলাকার কূপের কোনো কোণ নেই, যার কারণে কূপের চারপাশে পানির চাপ সমান থাকে।

কুয়াটি যদি গোলাকার না হয়ে বর্গাকার হয়, তবে জলের চাপ কেবল চার কোণে থাকবে। যার কারণে কূপটি বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হতে পারবে না। এর পাশাপাশি ধসের ঝুঁকিও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি। এরই কারণে সারাবিশ্বে কূপগুলি গোলাকার আকারে তৈরি করা।

আপনি দেখে থাকবেন আমাদের বাড়িতে ব্যবহৃত বাটি, প্লেট, বালতি এবং থালার আকারও গোলাকার হয়ে থাকে। কূপ যদি বৃত্তাকার বা গোলাকার তৈরি না করে বর্গাকার বা ত্রিভুজাকারে তৈরি করা হত তাহলে তার কোণগুলিতে পানির চাপ এতো পড়ত যে সেগুলো খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে যেত। তাই পানির চাপ যাতে সব দেওয়ালে সমান থাকে সেই উদ্দেশেই কূপের আকৃতি গোলাকার করা হয়।

এখানেই শেষ নয় আরও কারণ আছে। কুয়ার মাটি কখনও নেমে বা বসে যায় না। এর পেছনের কারণও কূপের গোলাকৃতি। এখানেও চাপ সবচেয়ে বড় কারণ। একটি বৃত্তাকার কূপে অভিন্ন চাপের কারণে, মাটি তলিয়ে ধসে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।