প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন: মেয়র আতিক

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে ৭৭জন চিত্রশিল্পীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ৭৭টি প্রতিকৃতি অংকনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে এবং চিত্রশিল্পীদের অনুপ্রেরণা দিতেই এই উদ্যোগ।

আজ রবিবার ( ২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনে ‘আগামীর অনুপ্রেরণা’ শিরোনামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত ৭৭জন চিত্রশিল্পীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ৭৭টি প্রতিকৃতি অঙ্কনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

মেয়র বলেন, ‘চিত্রশিল্পীরা রং তুলির মাধ্যমে দেশের কথা, সমাজের কথা ফুটিয়ে তোলেন। চিত্রশিল্পীরা তাদের কর্মের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করেন, মানুষের মধ্যে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সফল নেতৃত্বে ও কর্মের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যই জন্মদিনে ৭৭টি প্রতিকৃতি অংকনের উদ্যোগ নিয়েছি।’

 

ছবিগুলো প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ দিন নগর ভবনের ৬ তলায় প্রদর্শন করা হবে বলে জানান মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘মিরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় আমরা ব্যথিত। অবৈধ বিদ্যুৎ লাইনের অব্যবস্থাপনায় এই মানুষগুলোর মৃত্যু হয়েছে। আমাদের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মাসখানেক আগে এই অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিলো। জানতে পেরেছি একটি মাদ্রাসা অবৈধভাবে এই বিদ্যুৎ লাইন দিয়ে দিয়েছিল। যারা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর ঘটনায় তাদেরকেই দায় নিতে হিবে।

জলাবদ্ধতার বিষয়ে সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘পলিথিন, বোতল সবকিছু ড্রেনে ফেলার কারণে পানির প্রবাহে সময় লাগছে। গলির রাস্তা দিয়ে জায়গার অভাবে প্রশস্ত ড্রেন করা যাচ্ছে না। ২০ফিট রাস্তার জায়গা না পেলে প্রশস্ত ড্রেন করা সম্ভব হচ্ছে না। জলাধার, খাল ধ্বংস করা যাবে না। নগরের খাল ভরাট, বেদখল মূলত জলবদ্ধতার জন্য দায়ী। পরিবেশ দূষণ বন্ধ না করলে, পরিবেশ প্রতিশোধ নেবে। তাই আমরা কল্যাণপুরসহ সব বেদখলে থাকা খাল উদ্ধার করছি। ঢাকার খালগুলো মহানগর জরিপে অনেক ছোট হয়ে গেছে। শহরকে বাঁচাতে হলে খালগুলো মহানগর জরিপে নয় বরং সিএস এবং এসএ দাগ অনুযায়ী পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।’

ঢাকায় বিদ্যুতের লাইনগুলো মাটির নিচ দিয়ে নেওয়ার জন্য কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে তার একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) বলা হয়েছে জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নেওয়া একটি ব্যয়বহুল কাজ। শহরকে নিরাপদ রাখতে এই কাজটি আমরা করতে চাই। ইতিমধ্যে বুয়েটকে বিদ্যুতের তার নিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সম্মেলনে বিশ্বের নেতৃবৃন্দের প্রতি ক্লাইমেট চেঞ্জের ক্ষতি মোকাবিলায় ফান্ড দেয়ার আহ্বান জানিয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়মিত মোকাবিলা করা খুব কঠিন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিদেশি সহায়তা প্রয়োজন।

বরেণ্য শিল্পী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুন নবী বলেন, ‘এটি একটি মহতী উদ্যোগ। চিত্র শিল্পীদের কর্মে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশপ্রেমের চেতনা লালন করা হয়। তাদের কর্মের মাধ্যমে আদর্শ ফুটে উঠে। সিটি কর্পোরেশনের এই উদ্যোগ চিত্রশিল্পীদের শিল্প কর্মকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে।’

শিল্পী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ৭৭তম জন্মদিনে ৭৭টি প্রতিকৃতি যেমন অঙ্কন করা হচ্ছে তেমনি প্রধানমন্ত্রীর জন্ম শতবর্ষে একশোটি প্রতিকৃতি অংকনের প্রত্যশা করছি। এই ধরনের উদ্যোগের ফলে দেশের সাংস্কৃতিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে। যেটি দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে।’

ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেঃ জেনাঃ এ.কে.এম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।