‘প্রধান বিচারপতি যেভাবে সমাধান চেয়েছিলেন সেভাবেই হয়েছে’

বিচারবিভাগ স্বাধীন বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘সরকার এখানে কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা যেভাবে চেয়েছেন, সেভাবেই সমাধান হয়েছে।’ প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠানো প্রসঙ্গে শনিবার বিকালে আইনমন্ত্রী তার গুলশানের বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এইসব কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পদত্যাগের (এসকে সিনহার) বিষয়ে রাষ্ট্রপতির অফিস থেকে জেনেছি। আমার জানা মানে এই নয়, আমি পদত্যাগপত্র পড়েছি। আমি বিচারপতি এসকে সিনহার পদত্যাগপত্র দেখিনি। সেখানে তিনি কী উল্লেখ করেছেন, কী উল্লেখ করেননি, সে বিষয়ে আমি বক্তব্য দেব না। তিনি একেক সময় একেক কথা বলেন। আমি যেহেতু (পদত্যাগপত্র) দেখিনি। আমি কিছু বলব না।’

আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা জানতাম না, আপিল বিভাগের বাকি পাঁচ বিচারপতি তার (এসকে সিনহা) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তার সঙ্গে বিচার কাজ পরিচালনায় অপারগতা জানিয়েছেন। তিনি সেটা আমাদের জানাননি। সেক্ষেত্রে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ছুটি নিয়েছেন, বিদেশ গিয়েছেন। বিদেশে কী পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন, তাও জানি না। আমার সঙ্গে তার কোনও আলোচনা হয়নি।’

যেভাবে ৯৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে, সেভাবে প্রবীণতম বিচারপতি দায়িত্ব পালন করবেন উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সেক্ষেত্রে যে পরিস্থিতি উদ্ভব হয়েছে, তাতে নতুন কিছু করার প্রয়োজন নেই। অনুচ্ছেদ ৯৫ রাষ্ট্রপতির একক এখতিয়ার হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া। যতক্ষণ পর্যন্ত ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ না দিচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি তার দায়িত্ব পালন করবেন। সে হিসেবেই এখন বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা দায়িত্ব পালন করবেন।’

এসকে সিনহা পদত্যাগপত্র জমা দিলে পদ শূন্য হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধানের ৯৫, ৯৬, ৯৭ অনুচ্ছেদ একযোগে পড়তে হবে। পদ যদি শূন্যও হয়ে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা তার, সেটি তিনি প্রয়োগ না করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ৯৭ অনুচ্ছেদে যা লেখা আছে, সেটা সেভাবে কাজ করবে। কোনও শূন্যতা সৃষ্টি হয়নি।’

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে যে অভিযোগুলো উঠেছে, সেগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইন তার নিজের গতিতে চলবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’