‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল আ.লীগেরই কিছু কুচক্রী নেতা’

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, অনেকেই বলেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল একাত্তরের পরাজিত গোষ্ঠী রাজাকার, আল বদররা। কিন্তু সেটা কি ঠিক? ইতিহাস কিন্তু তা বলে না। ইতিহাস বলে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল এই আওয়ামী লীগেরই কিছু কুচক্রী নেতা। তার মানে মীরজাফর আমাদের মধ্যেই ছিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী।বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে শফিউর রহমান মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।

আনিসুল হক প্রশ্ন তোলে বলেন, যদি এই মীরজাফর আমাদের মধ্যে না থাকত, তাহলে ওই ৭১ এর পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুর গায়ে হাত দেয়ার ক্ষমতা রাখত না। তাই এখন বলব, আমরা যারা আছি তারা কি বঙ্গবন্ধুর প্রতি ঋণ শোধ করতে পেরেছি? পারিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ২১ বছর পর্যন্ত কিন্তু এজাহার হয়নি। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর মামলার এজাহার করেছেন। তিনিই এই হত্যা মামলা পরিচালনা করিয়েছেন। বিচার শেষে রায় কার্যকর করেছেন আদালত। তাহলে আমরা কী করেছি। আমরাতো সুবিধা ভোগ করেছি।

এ সময় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন বাধার প্রসঙ্গ তুলে বিচার বিলম্বিত হওয়ার কারণ তুলে ধরেন মন্ত্রী।

এর আগে ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট সাবেক প্রধান বিচাপতি সেুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্রে রাঘববোয়াল জড়িত থাকলেও তদন্তে ত্রুটির কারণে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা যায়নি।

সে বছর জাতীয় শোক দিবসে রক্তদান কর্মসূচির অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্টের ওই হত্যাকাণ্ডকে ‘কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল সেনা কর্মকর্তার বিদ্রোহ’ বলে অনেকে চালানোর চেষ্টা করলেও এটা যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র ছিল তার প্রথম প্রমাণ মাত্র দেড় মাসের মধ্যে হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দেয়া। ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি হিসেবে খন্দকার মোশতাক আহমেদ ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বা দায়মুক্তির এই অধ্যাদেশ জারি করেন।

বুধবার বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের সঞ্চালনায় এবং পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ. ম. রেজাউল করিম, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান, আব্দুল বাসেত মজুমদার, বারের সাবেক সম্পাদক ও অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, নজিবুল্লাহ হিরু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল প্রমুখ।