বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মালিকানা বুঝে নিল বাংলাদেশ
উৎক্ষেপণের ছয় মাসের মাথায় আজ (শুক্রবার) বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মালিকানা বুঝে নিয়েছে বাংলাদেশ। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেসের কাছ থেকে সন্ধ্যায় দেশের প্রথম এ স্যাটেলাইটের মালিকানা সম্পূর্ণভাবে বুঝে নেয়া হয়।
রাজধানীর বাংলামোটরে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) কার্যালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিসিএসসিএল চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত উপস্থিতিতে মালিকানার কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়।
এ বছরের গত ১১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়। এর মধ্যে দিয়ে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করে।
নিজ কক্ষপথ ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রিতে পৌঁছানোর পর এটির ইন অরবিট টেস্টসহ (আইওটি) নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সবই সম্পন্ন হয়েছে।
এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ চাম্পিয়নশিপ সরাসরি সম্প্রচার করার পরীক্ষাতেও এটি সফলতা দেখিয়েছে। পরে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দুবাইতে এশিয়াকাপ ক্রিকেটের সম্প্রচারসহ আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করেছে বাংলাদেশ টেলিভিশন।
একইসঙ্গে অন্য কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে গত ৩১ জুলাই এ স্যাটেলাইটের জন্য গাজীপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে সার্বক্ষণিক মহাকাশে থাকা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর গতিবিধি ও অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিষয়গুলো দেখভাল করছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া। স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণের পর এখন গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে সংকেত দিচ্ছে ও নিচ্ছে। গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে ট্র্যাকিং ও কন্ট্রোলিংয়ের কাজ হচ্ছে এবং পুরো সিস্টেমটিকে টেস্ট করা হচ্ছে।
এ স্যাটেলাইটটিকে ব্যবসায়িকভাবে সফল করতে ইতোমধ্যে থাইল্যান্ডের কোম্পানি থাইকমের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিসিএসসিএল। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসার দিকটি তারাই দেখবে। বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ যে ১৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সেই অর্থ সাশ্রয় বলে আশা করছে সরকার।
সব মিলে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করতে সরকারের খরচ হয়েছে দুই হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। আগামী সাত বছরের মধ্যে এ খরচ উঠে আসবে বলে হিসাব করেছে উৎক্ষেপণকারী সংস্থা বিটিআরসি।
ইতোমধ্যে সরকারের বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় এ স্যাটেলাইট থেকে সংযোগ নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তাছাড়া কোম্পানির পক্ষ থেকে সেবা নিতে ৪৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর ২০টি বাংলাদেশে ব্যবহারের জন্য এবং বাকিগুলো ভাড়া দেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন