বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড: জিয়া বেঁচে থাকলে তার বিরুদ্ধেও মামলা হতো
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার পরও জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হলো না বা এখন কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘হত্যা মামলা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। আর জিয়াউর রহমানের মৃত্যু হয়েছে ১৯৮১ সালে। মৃত মানুষের ওপর মরণোত্তর কোন মামলা করার নিয়ম নেই বলে তাকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় যোগ করা হয়নি। সে যদি তখন বেঁচে থাকতো তবে তার বিরুদ্ধেও মামলা হতো।’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি যাদুঘরে ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফর্মেশন (সিআরআই)’ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা: যাত্রা, অর্জন ও চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক সেমিনারের প্রশ্নোত্তর পর্বে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে আরেকজন প্রশ্ন রাখেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু হত্যার সামরিক ও রাজনৈতিক দু’টো দিকই ছিল। সামরিক দিক থেকে যারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে বিচার করে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেয়া খন্দকার মোশতাক আহমেদ বা তার মতো অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা নিয়ে উদাহরণ তৈরি করা যায় কি না?’’
এ প্রশ্নের জবাবেও আইনমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানান, মরণোত্তর মামলা করার আইন বাংলাদেশে নেই।
তবে আনিসুল হক বলেন, ‘নবাব সিরাজুদ্দৌলার সঙ্গে থেকে বিশ্বাসঘাতকতা করা মীরজাফরের নাম যেমন ইতিহাসে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে, তেমনি খন্দকার মোশতাক নামটিও যদি এভাবে বিশ্বাসঘাতকের প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার শুরু হয় তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ ব্যাপারে আরও পরিষ্কার হবে এবং ইতিহাসে তার বিশ্বাসঘাতকতা প্রতিষ্ঠিত হবে।’বঙ্গবন্ধু হত্যা-আইনমন্ত্রী
‘সংসদের কাজ হচ্ছে জনস্বার্থে আইন পাস করা। তবে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের মতো একটি কালো আইন কীভাবে সংসদে পাস হয়, এবং যারা ১৯৭৯ সালে এ আইন পাস করেছিল তাদেরকে কি বিচারের আওতায় আনা হবে?’ – এ প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইনটি যেভাবে পাস হয়েছে, সেটাও একটা ইতিহাস। আইনটা খন্দকার মোশতাক ২৬ সেপ্টেম্বর করেন। কিন্তু এই আইনটাকে সরাসরি উল্লেখ করে সংসদে পাস করা হয়নি। সংসদে তখন একসাথে কয়েকটি অর্ডিন্যান্সের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, এগুলো মার্শাল ল’র সময়ের হলেও প্রয়োজনের জন্য এগুলো পাস করে দেয়া হোক। ওই সময় ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বা এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে সংসদে আলাদা কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান আনিসুল হক।
সেমিনারে অতিথি ও বক্তা হিসেবে আরও ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও সিআরআইয়ের ট্রাস্টি নসরুল হামিদ এমপি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুরা হোসেন, প্রাক্তন সচিব ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান, দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন