বশেমুরবিপ্রবি’তে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪ পালন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন, প্রভাতফেরি, আলোচনা সভা, মসজিদে দোয়া মাহফিল ও মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব বলেন, “ভাষা আন্দোলন আমাদের স্বাধীনতার শেকড়। কারণ ভাষার জন্য যে আন্দোলন তা কোনো একক গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ ছিল না।
বরং অর্থনীতি, শিক্ষা, সমরবিদ্যাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের পিছিয়ে দেয়ার পর যখন ভাষার ওপর হাত দেয়া হয়, তখন আমাদের ছাত্রসমাজ তার প্রতিবাদ জানিয়েছে। রক্তের বিনিময়ে ভাষার মান রক্ষার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।
স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন যাতে শিক্ষার সকল স্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু নানা কারণে আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছি”। সেকারণে হীনমন্যতা দূরে রেখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠার আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুল আলম বলেন, “আজকাল ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করলেই এক ধরনের বাহাদুরী ভাব চলে আসে। অথচ বাংলা আমাদের মায়ের ভাষা, সবচেয়ে দামি ভাষা। আমরা যদি হৃদয়ে লালন না করি, তাহলে তো শ্রদ্ধা আসবে না। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছেন। যে কারণে অনেকটা সহজে বাংলা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে”।
এছাড়াও বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রেজারার বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মো. মোবারক হোসেন ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং জাতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সঞ্চালনা করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক অহনা আরেফিন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ড. মো. আসাদুজ্জামান, প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়া, বাংলা বিভাগের সভাপতি মো. আব্দুর রহমান, বিজয় দিবস হলের প্রভোস্ট ড. মো. রবিউল ইসলাম, ইলেকট্রনিক্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি ড. আরিফুজ্জামান রাজীব প্রমুখ।
এর আগে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুবের নেতৃত্বে একুশের প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা ০১ মিনিট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এ সময় শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, অফিসার্স এসোসিয়েশন, ছাত্রলীগ ও কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সকাল সাড়ে ৭ টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুবের নেতৃত্বে প্রভাতফেরি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
সকাল ৮টা থেকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শিক্ষক ঐক্য (নীল দল)’সহ বিভিন্ন বিভাগ, আবাসিক হল, বিভিন্ন জেলা, বিভাগীয় এবং সামাজিক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ছাত্র সংগঠনসমূহ শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগকৃত সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বিকেলে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন