বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ‘হোতার নাম’ জানাল যুক্তরাষ্ট্র
আড়াই বছর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিতে উত্তর কোরিয়ার এক হ্যাকার জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার নাম পার্ক জিন হিয়ক।
২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সনি কর্পোরেশন ও ২০১৭ সালে বিশ্বজুড়ে ‘ওয়ানাক্রাই র্যানসমওয়্যার’ সাইবার আক্রমণের দায়ে তার বিচার করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার দফতরকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স এ তথ্য দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার দফতর বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করে বলেছে, পার্ক ২০১৬ সালে নিউইয়র্ক ফেড থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঞ্চিত অর্থ হাতিয়ে নেয়ায়ও জড়িত ছিলেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র উদ্যোগ নিলেও নিজেদের এই নাগরিককে উত্তর কোরিয়া বিচারের জন্য ওয়াশিংটনের হাতে তুলে দেবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দুই দেশের মধ্যে অপরাধী হস্তান্তরের কোনো চুক্তিও নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের প্রতিক্রিয়া জানতে রয়টার্স জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো উত্তর পায়নি। পার্কের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি লাজারাস গ্রুপ নামে একটি হ্যাকার দলের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। তাদের লক্ষ্যবস্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
২০১৬ ও ২০১৭ সালে পার্ক যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিনে সাইবার আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দফতর ইতিমধ্যে পার্ক এবং তিনি যে চীনা কোম্পানিতে কাজ করেন সেই চোসান এক্সপোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ২০১৬ সালের ফেব্র“য়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ভুয়া সুইফট বার্তা পাঠিয়ে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো ২ কোটি ডলার লোপাট আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার জুয়ার টেবিল ঘুরে হাতবদল হয়। তার মধ্যে দেড় কোটি ডলার ফিলিপিন্স সরকার উদ্ধার করে ফেরত দিলেও বাকি অর্থের হদিস মেলেনি।
এ সাইবার আক্রমণের ঘটনা তখন বিশ্বজুড়ে তোলপাড় তুলেছিল। বাংলাদেশে সিআইডি এ ঘটনার তদন্ত করে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে রিজার্ভ চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার কথা ইতিমধ্যে জানিয়েছে।
ফিলিপিন্স সরকারও এ ঘটনার তদন্তের উদ্যোগ নেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ ফিলিপিন্সের যে ব্যাংকে পাঠানোর পর হাপিস করা হয়েছিল, সেই রিজল ব্যাংকের কর্মকর্তা মায়া সান্তোস দেগিতো এখন বিচারের মুখোমুখি।
তবে দেগিতোর দাবি, এ ঘটনার হোতাদের বাদ দিয়ে তাকে দাবার ঘুঁটি বানানো হয়েছে। তিনি ইঙ্গিত করেছেন, ফিলিপিন্সে ওই চুরির অর্থ ঢোকানোর পেছনে অনেক দেশের প্রভাব এবং ক্ষমতাধর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ব্যাংকটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে ফিলিপিন্সের সিনেট কমিটি সন্দেহ করছিল, বাংলাদেশের এ অর্থ চুরির পেছনে চীনা হ্যাকারদের হাত থাকতে পারে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন