বাকশালের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি আ.লীগ : হানিফ
বর্তমান সরকার আবারও বাকশাল কায়েমের তোড়জোড় করছে বিএনপির এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। বলেন, ‘বাকশাল আসবে কিনা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ নেয়নি।’
রবিবার ধানমন্ডিতে দলের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে হানিফ একথা বলেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অনুপস্থিতিতে এটি সম্পাদকমণ্ডলীর প্রথম সভা। কাদের সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রবর্তিত শাসনব্যবস্থা (বাকশাল) কার্যকর থাকলে নির্বাচন নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকত না, প্রশ্ন উঠত না। বাকশাল সর্বোত্তম পন্থা ছিল।’
এরপর গত বুধবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় বাকশাল যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছিল দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করে জাতির পিতা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে চেয়েছিলেন।’
বাকশাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যে ব্যবস্থাটি পুরোপুরিভাবে এদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে, যে ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণের ওপর একদলীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল, সেই ব্যবস্থার এখন প্রশংসা করা হচ্ছে।’
এতে অশনি সঙ্কেত দেখতে পাচ্ছেন মন্তব্য করে ফখরুল আরো বলেন, ‘এখনকার যে পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি, বাকশালকে আইনগতভাবে বৈধ করার ব্যবস্থা করে ফেলেছে। এটা এদেশের মানুষের কাছে ভয়াবহ বার্তা নিয়ে আসছে।’
বিএনপির এমন সমালোচনার প্রেক্ষিতেই বাকশালের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর অবস্থান সম্পর্কে জানান হানিফ।
বলেন, ‘বাকশাল আসবে কিনা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ নেয়নি। এ বিষয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তখন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য বাকশাল করা হয়েছিল। বর্তমান সরকারের ৫ বছর আছে। এ সময় অপ্রয়োজনীয় বিষয় আনার দরকার নেই।’
সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় বনানীর অগ্নিকাণ্ডের বিষয়েও কথা হয়েছে জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘এই অগ্নিকাণ্ডে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। অগ্নিনির্বাপণে ফায়ার সার্ভিসসহ যেসব বাহিনী কাজ করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।’
‘বর্তমান সরকারের সময় ফায়ার স্টেশন ও জনবল দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। নতুন অনেক সরঞ্জাম কেনা হয়েছে।’
হানিফ জানান, সভাপতিমণ্ডলীর সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে সারাদেশে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। এ জন্য ৮টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া চলতি বছরের অক্টোবরে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্যও ৮টি বিভাগে ৮টি টিমের খসড়া করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, আ খ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও আহমদ হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন