বাবা ভ্যানচালক, মা দিনমজুর; ছেলে কাঁপাতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ
বাবা পেশায় ভ্যান চালক ও মা দিনমজুরী করে সংসার চালান। খুবই অভাবের সংসার। তবুও অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অভিজিৎ সরকার স্কুল গেমসে ভালো খেলার সুবাদে ২০১৩ সালে IFA এর অনূর্ধ্ব ফুটবলে দলে সুযোগ করে নেয়।
সেই যাত্রা শুরু। এবার লক্ষ্য ফিফা আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করেই এগিয়ে যেতে চায় কেঁওটা পশ্চিমবঙ্গের হুগলির হেমন্ত বসু কলোনির এই ফুটবলার।
বাড়িতে অভিজিতের মা অলকা সরকারের শরীর খুব খারাপ। তিনি হয়ত মাঠে বসে ছেলের খেলা দেখতে পারবেন না। কিন্তু, জানিয়ে দিলেন যে তার আশীর্বাদ সবসময় ছেলের সঙ্গেই থাকবে।
মা বললেন, “আমি কোনওদিন মাঠে ছেলের খেলা দেখতে যাইনি। ছেলের খেলা দেখে এসে সবাই আমাকে বলে, এটা শুনে খুব ভালো লাগে। আনন্দ লাগে। খেলছে, খেলুক। দেশের জন্য একটা কাপ আনুক। আমি চাই যে ও যেন দেশের জন্য কিছু করতে পারে।”
অভিজিতের বাবা হরেন সরকার। পেশায় ছাপোষা একজন ভ্যানচালক। কিছুদিন আগে পর্যন্ত তাকে অনেকেই চিনতেন না। কিন্তু, আজ তিনি অভিজিতের গর্বিত বাবা। গর্ব হবে না’ই বা কেন? তার ছেলে দেশের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সেরা মিডফিল্ডার। তবে ছেলের সাফল্যে যেমন খুশি হয়েছেন, তেমনই ভবিষ্যত নিয়ে যারপরনাই উদ্বিগ্ন বাবা হরেন সরকার।
তিনি বললেন, “লোকে আগে আমাকে ভ্যানচালক হরেন বলে ডাকত আর এখন আমাকে অভিজিৎ-এর বাবা বলে ডাকে। এটাই আমার বড় গর্ব। মাঠে যেতে না পারার আক্ষেপ তো থাকবেই। কিন্তু, ছেলে গোল করলে সেই আক্ষেপ দূর হয়ে যাবে। ভারত সেমিফাইনাল জিতলে কোলকাতায় ফাইনাল খেলা হবে। তখন অবশ্যই যাব।”
তবে পাশাপাশি তার আর্জি, ছেলের যেন একটা ভালো চাকরি হয়। সেইসঙ্গে ফুটবল বিশ্বে অভিজিৎ যেন ভারতের নাম আরও উজ্জ্বল করতে পারে।
আরও একটা কথা জানিয়ে রাখা ভালো। ইতিমধ্যে দলের সেরা খেলোয়াড় হিসাবে ১০ নম্বর জার্সি পেয়েছে অভিজিৎ। ইতিপূর্বে, গত ১৯ মে জুনিয়র বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে ইট্যালিকে ২-০ গোলে পরাস্ত করে ভারত। সেই ম্যাচেই গোল করে নায়ক হয়ে উঠেছিল অভিজিত। এখন বিশ্বকাপের মঞ্চে তার পারফরম্যান্সের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা ভারত।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন