বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ করবে না ইসি
উচ্চ আদালতের এক রায়ের প্রেক্ষিতে বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সিদ্ধান্তেরর বিষয়ে দু’ একদিনের মধ্যে চিঠি দিয়ে দলটিকে জানিয়ে দেবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, উচ্চ আদালতের একটি আদেশের কপি আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আমরা বিষয়টি কমিশন সভায় তুলেছি। কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালতের আদেশের প্রতিপালন করবে অর্থাৎ সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ করবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালত আমাদের সরাসরি আদেশ দিয়েছেন। যেহেতু এ আদেশে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হইনি তাই আপিল করবো না।
জানা গেছে, বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারায় বলা ছিল, দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত কেউ দলের নির্বাহী পদে থাকতে পারবেন না। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলার সাজা হওয়ার আগে এই ধারা সংশোধন করে গঠনতন্ত্র জমা দেয় ইসিতে। বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একাধিক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। গঠনতন্ত্রে ৭ নম্বর ধারাটি বাতিল না হলে এরই মধ্যে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বিএনপির নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না বলে ইসি মনে করছে।
ইসি সূত্র জানায়, বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মোজাম্মেল হোসেন নামে এক ব্যক্তির রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর ডিভিশন বেঞ্চ ৩১ অক্টোবর বুধবার এ আদেশ দেন।
এ মামলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে দুই নম্বর ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে তিন নম্বর প্রতিপক্ষ করা হয়েছে। রায়ের পরের দিনই পহেলা নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশ প্রতিপালনের বিষয়ে একটি ফাইল কমিশনে তোলায়। এতে বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করা এবং গত ৩০ অক্টোবর মোজাম্মেল হোসেনের ইসিতে জমা দেয়া আবেদনটি ৩০দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বিষয়ে কমিশনের অনুমোদন চাওয়া হয়। কমিশন হাইকোর্টের আদেশ প্রতিপালনের অনুমোদন দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০০৮ এ গঠনতন্ত্র গ্রহণ বা বাতিলের বিষয়ে কিছু বলা নেই। তবে, বিধিমালার ৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের শর্তাবলী পরিপালন সম্পর্কে কমিশনকে, সময় সময় অবহিত করবে এবং এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দলকে নিম্ন লিখিত (চারটি) ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ক. দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নূতন কমিটির নির্বাচিত সদস্যদের তালিকা এবং সংশ্লিষ্ট দলের এতদসংক্রান্ত সভার কার্যবিবরণীর অনুলিপি কমিশনে দাখিল।
খ. প্রতি বৎসর ৩১ জুলাই এর মধ্যে পূর্বের পঞ্জিকা বৎসরের সংশ্লিষ্ট লেনদেনের অডিট রিপোর্টের একটি কপি কমিশনে দাখিল।
গ. কমিশন, সময় সময়, যে সকল তথ্য বা কাগজপত্র চাইবে তা কমিশনে প্রেরণ এবং
ঘ. কমিশন, সময় সময় যে সকল বিষয়ের উপর মন্তব্য বা ব্যাখ্যা চাহিবে উহা পরিপালন।
এ কর্মকর্তা জানান, এ ধারায় কমিশনকে অবহিত করার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। তবে কমিশন গ্রহণ করবে কী না তা উল্লেখ নেই। এছাড়া আরপিওর ৯০(এইচ) ধারায় রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। সেখানে সংশোধিত গঠনতন্ত্র কমিশন গ্রহণ না করার কারণে দলের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন