বিএনপি এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয় : হানিফ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, ‘বিএনপি নামক একটি দলের নেত্রী দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে জেল খাটছেন। আর আরেকজন বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে তাদের কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না।’
শনিবার বিকালে নগরীর একটি ক্লাবে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, ‘বিএনপি এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়।’ গত বুধবার দেওয়া এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল অলীর বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ‘অলী এখন বিএনপির নেতৃত্ব দিতে চান। এই হচ্ছে, বিএনপির অবস্থা! বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার রাজনৈতিক দল। এ দেশের যা কিছু অর্জিত হয়েছে তা হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই। এই আওয়ামী লীগকে ঘিরেই বাংলাদেশর মানুষের সব স্বপ্ন। ১৯৬৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। দ্বিতীয়বার বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিল। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই মহান মুক্তিযদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। তৃতীয়বার এ দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বপ্ন দেখেছিল। আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অর্থনৈতিকভাবে একটি সফল রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম এই বাংলাদেশে তাদের ক্ষমতায় বসানো হলো। রাজাকার শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী করা হলো, আব্দুল আলীমকে করা হল রেলমন্ত্রী। সেই সময় বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এক দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে সেই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সৃষ্ট জঙ্গিবাদের বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত ১০ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত হয়েছে। এক সময়ের দুর্যোগ-দুর্নীতির বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আর এর সব অবদান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার। এই উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করতে একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকায় তারা কামিয়াব হতে পারে নাই।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর কোনো কর্মীকে আওয়ামী লীগে স্থান দেওয়া হবে না। কারণ তারা এদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তারা এখনো পাকিস্তানের এজেন্ট হয়ে কাজ করছে।’
মাহবুবুল আলম হানিফ এক শ্রেণির রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীর সমালেচনা করে বলেন, ‘গত ১০ বছরে এ দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের উন্নয়ন তাদের চোখে পড়ে না। বাংলাদেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশে ৪ লাখ টন খাদ্য মজুদ আছে।’
হানিফ বলেন, ‘আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে খুলনা মহানগরসহ আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’
বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মহনগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
মহানগর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ এমপি, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, কেন্দ্রীয় সদস্য ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি, এস এম কামাল হোসেন, পারভীন জামান কল্পনা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিৎ অধিকারী ও অ্যাডভোকেট চিশতি সোহরাব হোসেন সিকদার।
তৃণমূল নেতাদের মধ্যে বক্তৃতা দেন দৌলতপুর থানা সভাপতি শেখ সৈয়দ আলী, খালিশপুর থানা সভাপতি সানাউল্লাহ নান্নু, খানজাহান আলী থানা সভাপতি শেখ আবিদ হোসেন, সোনাডাঙ্গা থানা সভাপতি বুলু বিশ্বাস, প্যানেল মেয়র আলী আকবর টিপু, অধ্যাপক হোসনে আরা রুনু, মুন্সি ওয়াদুদ, মাকসুদ হাসান পিকু, চৌধুরী মিনহাজ উজ্জামান চৌধুরী স্বপন প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন