বিএনপি ক্ষমতায় এলে কেউ ঘরে থাকতে পারবে না : তোফায়েল

ভোলায় ২৫ হাজার দলীয় কর্মিসভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ওরা যত শর্তই দিক না কেন নির্বাচনে আসা ছাড়া তাদের আর কোনো বিকল্প পথ নেই। তবে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে দেশে অরাজগতা সৃষ্টি করে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেক নির্যাতন সইতে হয়েছে। আবার যদি বিএনপি সুযোগ পায়, অত্যাচারের সীমা থাকবে না। কেউ ঘরে থাকতে পারবে না। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

শনিবার ভোলা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা সদরের ১৩ ইউনিয়নের ১১৩টি কেন্দ্র কমিটির সদস্যদের নিয়ে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা আছেন বলেই আমি তোফায়েল আহমেদ হয়েছি। আপনারাই শক্তি। আপনারাই আওয়ামী লীগের দুর্গ । তাই ঘরে ঘরে এমন দুর্গ গড়ে তুলতে হবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ওরা শর্ত দিয়েছে, তাদের কোনো কর্মীকে গ্রেফতার করতে না। ভোলায় বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয় না। দু’একজন আটক হয়েছে তাদের অন্য মামলায়।

এ সময় মন্ত্রী ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারের উন্নয়নের কথাও তুলে ধরে বলেন, উন্নয়নই হচ্ছে আওয়ামী লীগ। উন্নয়নের প্রতীকই হচ্ছে নৌকা।

ভোলার উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে ৪৫ হাজার, এলজিইডির মাধ্যমে ব্রিজ কালভার্ট রাস্তা হয়ছে ৫১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকার, গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে ৬০৭ কোটি টাকার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে নদীভাঙন রোধে কাজ হয়েছে ১৬১২ কোটি টাকা ও আরও ১৩০০ কোটি টাকার কাজ প্রক্রিয়াধীন, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে কাজ হয়েছে ১১৩ কোটি টাকার, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অধীন কাজ হয়েছে ৫০ কোটি টাকার, সমাজসেবা দফতরের মাধ্যমে কাজ হয়েছে ১৫ কোটি টাকার।

বর্তমানে জেলায় ৩২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষম দুটি কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আরও দুটি কেন্দ্রস্থাপনের কাজ চলছে। জেলায় প্রতিদিন বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে ১২শ মেগাওয়াট । এখানে প্রচুর পরিমাণে গ্যাসের মজুদ রয়েছে। গ্যাসভিক্তিক শিল্পনগরী গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তার আর একটি স্বপ্নপূরণ বাকি রয়েছে। তা হচ্ছে ভোলা-বরিশালের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণ করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ওই ব্রিজ নির্মাণের ঘোষণা দেন। এসব উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারের আবার ক্ষমতায় আসা প্রয়োজন। নেতাকর্মীদের ওই লক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

সমাবেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি মঞ্চে উপস্থিত থাকেন বাণিজ্যমন্ত্রীর সহধর্মিণী আনোয়ারা বেগম, জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক আবদুল মমিন টুলু, পৌর মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নকিব, জেলা আওয়ামী লীগের অপর যুগ্ম সম্পাদক এনামুল হক আরজু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব, উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইউনুছ, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ইয়ানুর রহমান বিপ্লব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, উপজেরা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান মো. বশির আহম্মেদ, ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন মনসুর, ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মাতাব্বর, কাচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধান শিক্ষক আমির হোসিন, ভেদুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সম্পাদক আব্দুল হাই, ধনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হারুনুর রশিদ হাওলাদার, ধনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুব আলম সানু প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব। গত দেড় মাস ধরে জেলা সদর উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ১১৩টি ভোটকেন্দ্র এলাকাভিত্তিক ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির ১৭ হাজার ২৬ জন সদস্যদের নিয়েই শনিবার মূল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।