বিএনপি-জামায়াতের টাকা নিন, নৌকায় ভোট দিন : প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি-জামায়াত আবার অবৈধ টাকা দিয়ে ভোট কেনার ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের কাছ থেকে অর্থ নিন আর নৌকা মার্কায় ভোট দিন, এটাই এখনকার স্লোগান। কারণ ক্ষমতায় থাকতে তারা দুর্নীতি করে টাকার পাহাড় বানিয়েছে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ভিডিও কনফারেন্সে রাজশাহীর ছয়টি আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের জনগণের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন শেখ হাসিনা।
এ সময় আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন প্রার্থীরা।
জনসভায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীসহ জেলার ৯ উপজেলা এবং মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ২০০৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আমরা জনগণের সেবা করে যাচ্ছি। গত নির্বাচনেও বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন ঠেকানোর জন্য অগ্নিসংযোগ করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সাধারণ মানুষকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে মারে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার মতো জঘন্য ঘটনা তারা ঘটিয়েছিল নির্বাচন ঠেকানোর জন্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রাজশাহীতে বাংলা ভাই সৃষ্টি করে মদদ দিয়ে প্রকাশ্যে মিছিল করার সুযোগ করে দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট। তারা জঙ্গিদের ব্যবহার করে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে। একের পর এক বোমা হামলা চালিয়েছে। তাদের এসব অপকর্মের জবাব দিয়ে জনগণ ২০১৪ সালের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। তাই জনগণের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
রাজশাহী অঞ্চলেও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, কর্মসংস্থান যেন বৃদ্ধি পায়, ব্যবসা-বাণিজ্য যেন উন্নত হয় সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিচ্ছি। পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রাজশাহী শহর রক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আলাদা রাস্তা করে দিয়েছি যেন যোগাযোগ সহজ হয়। এভাবে বহুমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। কারণ, আমরা ক্ষমতায় এলে সব এলাকার মানুষ যেন উন্নয়ন পায় সে পদক্ষেপ আমরা নিয়ে থাকি।
আসন্ন নির্বাচনে নৌকায় ভোট চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করব। ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। অর্থাৎ ২০২০ এর মার্চ মাস থেকে ২০২১ এর মার্চ মাস, আমরা এই বর্ষটাকে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। আমরা যেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে পারি সেই সুযোগটা আমরা চাই এবং তার জন্যই নৌকা মার্কায় ভোট চাই।
তিনি বলেন, রাজশাহী এয়ারপোর্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা তা আবার চালু করেছি। এই এয়ারপোর্ট আমরা আরও উন্নত করব, সেই পরিকল্পনা নিয়েছি। সার্বিকভাবে আমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। উন্নয়নের ধারা যদি অব্যাহত রাখতে হয়, তাহলে অবশ্যই নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাই।আমাদেরকে ভোট দিলেই আমরা এসব করতে পারব।
গত সিটি নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে মেয়র নির্বাচিত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী মহানগরবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, যেভাবে আপনারা আমাদেরকে মেয়র উপহার দিয়েছেন, ঠিক সেইভাবেই আমাদের আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন।
বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী একে একে রাজশাহীর নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই রাজশাহী সিটি মেয়র ও মাদ্রাসা ময়দানের সমাবেশের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে কথা বলেন।
ভিডিও কনফারেন্সের রাজশাহী সমাবেশের সঞ্চালক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও জেলার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের সঙ্গেও কথা বলেন শেখ হাসিনা।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আখতার জাহান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেসা তালুকদার, সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. সাইদুর রহমান খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার, মেয়র লিটনের সহধর্মিণী শাহিন আক্তার রেণী প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন