বিদ্যুতের মিটার চুরি: বিকাশে টাকা পাঠালেই মিটার ফেরত!
সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শুরু হয়েছে বিদ্যুতের মিটার চুরি। সম্প্রতি জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় বেড়েই চলেছে মিটার চুরি।
এসময় চোরচক্র রেখে যাচ্ছে একটি বিকাশ করা নম্বর। বিকাশে টাকা পাঠালে ফেরত দিচ্ছে মিটার।
সম্প্রতি সদর উপজেলার বহুলী, কামারখন্দ উপজেলা, উল্লাপাড়া উপজেলা, শাহজাদপুর উপজেলা, রায়গঞ্জ উপজেলাসহ অনেক উপজেলাতে মিটার চুরির ধুম পড়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় কামারখন্দ উপজেলায় শনিবার রাতে চুরি হয়েছে ১৭টি মিটার। এর বেশীর ভাগই বাণিজ্যিক মিটার। বাণিজ্যিক মিটার চুরির কারণে বিপাকে পড়েছে এলাকার চাউল কল মালিকরা। ফলে চাল কলগুলোর মিটার চুরি হওয়ায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এতে ধান সিদ্ধ করা থেকে শুরু করে চাল তৈরীর সকল প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে।
কামারখন্দের চালকল মালিক সাগর আলী বলেন, গত শনিবার রাতে মিটার চুরি হয়েছে। মিটার চুরি করে নেয়ার পর চোর চক্র মিটার ফ্রেমে টোকেনে একটি বিকাশ নম্বর রেখে যায়। সেই নম্বরে চুরি যাওয়ার পরদিন সকালে যোগাযোগ করা হলে চক্রের এক সদস্য জানান তারা এখন ঘুমাচ্ছেন বিকেলে ফোন দিতে বলেন।
বিকেলে ফোন করা হলে আমার তিনটি মিটারের জন্য মিটার প্রতি ৬ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে প্রতিটি মিটারে ৩ হাজার করে ৯ হাজার টাকা দিলে চালকলের পাশের একটি বাড়ীর পাশে বালুর ভিতরে মিটারগুলো রাখা আছে বলে জানায় চোর চক্রের সদস্য।
চালকলের ম্যানেজার মো. জিন্নাহ জানান, বিদ্যুতের লাইন চালু থাকা অবস্থায় সাধারণ মানুষের পক্ষে মিটার চুরি করা সম্ভব নয়। পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যানদের সাথে বাহিরের শ্রমিক যারা কাজ করেন তারা মিটার চুরির সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় ধান থেকে চাল তৈরী করার সকল প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। এতে চাল তৈরী করতে না পেরে বিপাকে পড়েছি।
কামারখন্দ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শাহীনুর কবীর জানান, মিটার চুরির বিষয়টি নতুন কিছু নয়। এর আগেও মিটার চোর চক্রের ৪জন সদস্যকে ঢাকার সাভার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের গ্রেফতার করার পর এই এলাকায় গত প্রায় দুই বছরে মিটার চুরির কোন ঘটনা ঘটেনি। সাম্প্রতিক মিটার চুরির অভিযোগ পেয়েছি। পূর্বের মত এবারও আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করতে পারবো।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অখীল কুমার সাহা জানান, কামারখন্দের ১৭টি মিটার চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মিটার চুরির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে মিটার চুরি রোধে মাইকিং করাসহ লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন