বিপর্যস্ত পশ্চিমবঙ্গ, বন্যার্তরা আশ্রয় নিতে বাংলাদেশে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গোটা উত্তরাঞ্চলই রয়েছে পানির নিচে। বিভিন্ন জায়গায় বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। তোর্সা, মহানন্দা, ফুলহার, টাঙনের ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে কৃষি জমি থেকে বসত বাড়ি। ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়া কয়েকশ মানুষ এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। কোচবিহার জেলার অন্তত দুইটি এলাকা থেকে বহু মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ওই এলাকা থেকে নির্বাচিত উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
বহু এলাকায় নদীর পানি এখনও জাতীয় সড়ক, রেললাইনের উপর দিয়ে বইছে। অনেক জায়গায় রাস্তা, সেতু ভেঙে গিয়েছে। অনেক জায়গায় মানুষ পানিবন্দি। পশ্চিমবঙ্গের বন্যা কবলিত এলাকগুলোতে ত্রাণের অভাবে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে।
লালমনিরহাট থেকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম বিবিসিকে বলেন, ‘সীমান্তবর্তী ভারতীয় গ্রামগুলো থেকে বন্যাক্রান্ত হয়ে ৫ থেকে ৬শ লোক এসেছিল। যেহেতু তারা বিপদে পড়ে এসেছে, মানবিক কারণেই তাদেরকে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়নি। যারা আশ্রয় নিতে এসেছিল, তাদের বেশিরভাগই ভারতে ফিরে গেছেন। এখন ওই এলাকায় বড়োজোর ৫০-৬০টি ভারতীয় পরিবার রয়ে গেছে।’
যদিও বিএসএফের সূত্রে দাবি করা হয়, ভারত থেকে বাংলাদেশের দিকে চলে গেছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ, এমন তথ্য বিজিবি তাদের জানায়নি।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানান, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া জারিধরলা আর দরিবস এলাকায় প্রায় হাজার ছয়েক মানুষ থাকেন। নদীতে এমন স্রোত, যে এত লোককে উদ্ধার করে নিয়ে আসা অসম্ভব। ত্রাণও পৌঁছনো যাচ্ছে না। সেজন্যই তারা বাংলাদেশের দিকে চলে গেছে বলে জানতে পেরেছি।’
রবীন্দ্রনাথ ঘোষ আরও বলেন, ‘তুফানগঞ্জ এলাকার চরবালাভূতেরও একই অবস্থা।তবে ঠিক কত জন সেখান থেকে বাংলাদেশের দিকে গেছেন, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমরা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ যে আমাদের নাগরিকদের বিপদের দিনে তারা ত্রাণ দিয়ে সাহায্য করছেন।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা জানিয়েছেন, বন্যায় শুধুমাত্র উত্তরাঞ্চলেই এ পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবার পিছু দুই লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
পশ্চিমবঙ্গের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, উত্তরবঙ্গের ছয়টি জেলা প্লাবিত। এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। প্রায় ১৫ লাখ মানুষ প্লাবনে ক্ষতিগ্রস্ত। মোট ৬২২টি ত্রাণ শিবির সরকার থেকে খোলা হয়েছিল।
এদিকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর কোচবিহার, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুরে শুরু হয়েছে ভাঙন। কোচবিহারের জারিধরলা, গীতালদহ, হরিদাসখামার, মরাকুঠি এলাকায় বানিয়াদহ, ধরলা নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরে পুনর্ভবা এবং টাঙনের ভাঙনে গঙ্গারামপুর এবং বংশীহারিতেই কয়েকশো বিঘা কৃষিজমি তলিয়ে গিয়েছে বলে দাবি। মালদহের চাঁচলেও মহানন্দার বাঁধ ভেঙেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন