বিবাহিত, অছাত্র ও নিষ্ক্রিয়দের দিয়েই চলছে ইবি ছাত্রদল
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/01/InCollage_20250112_174201675-900x450.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
অছাত্র, বিবাহিত, চাকরিজীবী ও নিস্ক্রিয় নেতাকর্মীদের দিয়ে চলছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। গত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটির দেখা পায়নি শাখাটি। বর্তমান কমিটির অর্ধেকেরও বেশি নেতা নিষ্ক্রিয় থাকায় দলীয় কর্মসূচিতে কমিটিতে থাকা নেতাদের দেখা মেলে না।
এতে জুলাই অভ্যুত্থানের আগে সংগঠনটির কার্যক্রমে ছিল স্থবিরতা। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সংগঠনটি ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও তাদের অধিকাংশ নেতাকর্মী নিষ্ক্রিয় থাকায় সংগঠনটির সাংগঠনিক মান নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। পদপ্রাপ্ত নেতাদের অনুপস্থিতিতে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে দলীয় কর্মীরা। ক্যাম্পাসের অছাত্রদের বাদ দিয়ে নিয়মিত ছাত্রদের মধ্য থেকে নেতৃত্বের দাবি করছেন তারা।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৬ জুন মো. সাহেদ আহম্মেদকে আহ্বায়ক ও মাসুদ রুমী মিথুনকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্যের কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। কমিটিতে অছাত্রত্ব, বিবাহিত ও চাকরিজীবীদের পদ দেওয়ায় প্রতিবাদ করে কমিটি প্রত্যাখ্যান করে একাংশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, আহসান হাবীব, সবুজ হোসাইন ও সদস্য সাব্বির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
তথ্য মতে, ৩১ সদস্যের কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবু দাউদ চাকরিজীবী ও বিবাহিত, মো. ওমর শরীফ চাকরিজীবী ও দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয়, নাজমুল ইসলাম চাকরিজীবী ও নিষ্ক্রিয়, নৌশিন তাবাসসুম বিবাহিতা ও সদস্য মাহমুদুল মৃদুলও বিবাহিত। এছাড়াও যুগ্ম আহ্বায়ক শাহানুর হোসেন, মো. সবুজ হোসাইন, মেহেদী হাসান হিরা, মনিরুল ইসলাম, তুহিন হোসাইন, লিমন হোসাইন দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কার্যক্রমে আসেন না। এছাড়াও ‘অপরিচিত’ হিসেবে কমিটিতে আছেন সদস্য রাজু আহমেদ, মো. সম্রাট হোসাইন, সানজিদা ইসলাম ও রুমা খাতুন। ইবি শাখার সক্রিয় নেতাকর্মীরা তাদেরকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে ইবি ছাত্রদলের কর্মী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘৩ মাসের জন্য এই আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হলেও ৪ বছর পেরুলেও পূর্নাঙ্গ কমিটি অথবা নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
আমি ছাত্রদলের সাথে ২০২০ সাল থেকে সম্পৃক্ত কিন্তু বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির ৩১ সদস্যকে কখনোই একসাথে হতে দেখিনি। এই ৩১ সদস্যের মধ্যে অধিকাংশই অনিয়মিত, অপরিচিত ও অছাত্র।
একটি সংগঠন চালাতে হলে দায়িত্বশীলদের এমন অপারগতা সুখকর নয়। আমরা অছাত্র, বিবাহিত, চাকরিজীবী ও নিস্ক্রিয় বাদ দিয়ে নিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানাচ্ছি। না হলে আমরা এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করব। কেননা এভাবে চলতে থাকায় ইবি ছাত্রদলের গৌরব ক্ষুন্ন হচ্ছে।’
ইবি ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, ১১ বছর পর দেওয়া আহ্বায়ক কমিটিতে পদপ্রাপ্ত অধিকাংশ নেতা অপরিচিত ও নিষ্ক্রিয়। এছাড়াও বিবাহিত ও চাকরিজীবী আছে।
আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ তিন মাস থাকলেও প্রায় চার বছর পার হওয়ার পরও সম্মেলন বা নতুন কমিটি হয়নি। আমরা আশা করছি ইবি ছাত্রদলকে গতিশীল করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল দ্রুতই ত্যাগী ও নির্যাতিতদের মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীবান্ধব কমিটির অনুমোদন দিবে।
এ বিষয়ে জানতে সংগঠনটির আহ্বাবায়ক শাহেদ আহম্মেদকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে সদস্য-সচিব মাসুদ রুমী মিথুন বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে অনেকেই নিষ্ক্রিয় ছিল। এখন পরিস্থিতি বিবেচনা তাদের অনেকেই সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। সার্বিক বিষয়ে আমরা কেন্দ্রকে নিয়মিত অবহিত করছি। কেন্দ্র বিষয়গুলো পর্যালোচনা পদক্ষেপ নিবে। তবে আমরা নিয়মিত দলীয় কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কমিটিতে নিষ্ক্রিয় ও চাকুরী করা অবস্থায় পদ পেয়েছে এই তথ্য আমাদের কাছে নেই। তাই এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আর কমিটির সদস্যের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে আমরা পর্যালোচনা করছি। দ্রুতই একটি সমাধানে আসব। তবে কবে নাগাদ নতুন কমিটি সেটি বলা যাচ্ছে না।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন