বিরোধীদল দমন করে সরকারের গদি রক্ষা হবে না: রিজভী
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দল দমনের সকল ব্যবস্থা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এভাবে বিরোধী দল দমন করে বিশ্বের কোনো স্বৈরশাসক গদি রক্ষা করতে পারেনি। আপনারাও পারবেন না। সাহস থাকলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন, দেখবেন জনগণের প্রবল স্রোত আপনার সিংসহানের দিকে কিভাবে ধেয়ে যায়! কারণ জনগণ চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে এক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।
রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি নেতা শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, রফিকুল আলম মজনু, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন ও শ্রমিক নেতা সুমন ভুইয়া সহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দাবিতে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম। সংগঠনের সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, কাজী মনিরুজ্জামান মনির, ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির, এমজি মাসুম রাসেল প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সেক্রেটারি ইসমাঈল হোসেন সিরাজী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের মানুষ ভয়ংকর দু:সময়ের মধ্যে বসবাস করছে। তাদের কথা বলা ও লেখার স্বাধীনতা নেই। অথচ সংবিধান আমাদের কথা বলা ও লেখার স্বাধীনতা দিয়েছে। দেশের গণতন্ত্রের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড নেই।
কিন্তু তারা গণতন্ত্রকে ভয় পায়। গণতন্ত্রের মানে তো বিরোধী দল আপনাদের সমালোচনা করে আপনাদের ভুল ধরিয়ে দিবে। কিন্তু আপনারা সেটা সহ্য করতে পারেন না।
‘দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল নেই’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলছেন দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল নেই। আসলে বনের নেকড়ে সকল প্রাণী খেয়ে ফেলার পর বলছে যে আর প্রাণী নেই।
আরে বিরোধীদল শক্তিশালী বলেই তো তাদেরকে আপনি কারাগারের ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় আছেন। তাদেরকে গোরস্থানে পাঠিয়েছেন। আসলে বিএনপি ও বিরোধী দল আপনি ভয় পান বলেই তো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তরুণ নেতা ইশরাককে বন্দি করেছেন। শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, রফিকুল আলম মজনু ও সুমন ভুঁইয়াকে বন্দী করেছেন। আসলে প্রধানমন্ত্রী ভীতু।
তিনি বলেন, সরকার পাতানো সংসদ করেছে যেখানে বিরোধী দল নেই। সেখানে মমতাজের গান হয় কিন্তু বিরোধী দলের বিতর্ক নেই। আর বলেন দেশে বিরোধী দল নেই। অন্যদিকে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করছেন, কারাগারে বন্দী করেছেন। বিরোধী দল দমনের সমস্ত ব্যবস্থা আপনি করেছেন। এভাবে পৃথিবীর কেউ গদি রক্ষা করতে পারেনি। আসলে আপনি আতংকের মধ্যে আছেন আর রাতের অন্ধকারে ফাঁকা বুলি দিচ্ছেন। আপনার সাহস থাকলে খালেদা জিয়াসহ সকল নেতাকর্মীদের মুক্তি দেন। দেখবেন প্রবল স্রোত কিভাবে আপনার সিংহাসনের দিকে ধেয়ে যায়! শত নিপীড়ন নির্যাতনের মাধ্যমে জনগণ কাতারবন্দী হয়ে আপনার সিংহাসন থেকে টেনে রাজপথে ধুলার মধ্যে নামানোর সাহস যোগার করে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আবদুস সালাম আজাদ বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন অনুপস্থিত। ক্ষমতাসীন সরকার অবৈধভাবে দেশ পরিচালনা করছে। তারা দেশকে নরকে পরিণত করেছে। বাকশাল প্রতিষ্ঠার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।
আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, ক্ষমতাসীন অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পারছে না। কারণ তারা রোগাক্রান্ত। আমাদেরকে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। অবিলম্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে। সেইসাথে বিএনপি সহ বিরোধী দলের সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দিতে হবে। আসুন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন