বেঁচে থাকতেই মৃত্যুর উৎসব!

উৎসব বলতে সাধারণত সামাজিক, ধর্মীয় এবং ঐতিহ্যগত প্রেক্ষাপটে পালিত আনন্দ অনুষ্ঠানকে বোঝায়। কিন্তু প্রতি বছর জাপানে চলে মৃত্যুপূর্ববর্তী উৎসব। ‘শুকাটসু’ নামের এই উৎসব দেখলে মনে হবে কোনো ব্যক্তির শেষ বিদায়ের প্রস্তুতি চলছে। কফিনের ভেতরে শায়িত মানুষ, চোখ বন্ধ, দেহ নিথর। যেন কোনো মৃত ব্যক্তি শুয়ে আছেন।

প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর এমন উৎসবের আয়োজন হয় জাপানে। প্রতি বছরের মতো এবারও ওইদিনে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উৎসবে একজন ‘মৃত্যু বিশেষজ্ঞ’ উপস্থিত থাকেন। তার জ্ঞানগর্ভ ভাষণের পর কফিনে শোয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। এ জন্য রীতিমতো লাইন লেগে যায়! প্রবীণ থেকে নবীন হাসিমুখে সবাই শুয়ে পড়েন কফিনে। তার আগে অবশ্য কফিন বাছাই করে নিতে হয়।

বেঁচে থাকতেই মৃত্যুর জন্য রীতিমত উৎসব! আয়োজকদের দাবি, মৃত্যু সম্পর্কে সচেতন হলে জীবনের গুরুত্ব বেড়ে যায়। বেঁচে থাকার কারণ উপলব্ধি করা যায়। তাই এমন আয়োজন। এ বছর হাজারো দর্শনার্থীর ভিড়ে উৎসবে স্থান পেয়েছে নানা ধরনের কফিন, সমাধিপ্রস্তর, শবযান ও মৃত্যুর পর অবশিষ্টাংশ আকাশে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা। এ ছাড়া পেশাদার কফিন প্রস্ততকারকরা তাদের নানা দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন এ উৎসবে। পাশাপাশি মৃত্যুর পর তাদের দেহ নিয়ে কী করা হবে, এ বিষয়ে নানা ধারণা দেয়া হয় সেখানে। জাপানের বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানও উৎসবে অংশ নিয়েছে।

মৃত্যু পরবর্তী নানা কাজের জন্য আত্মীয়-স্বজনকে বিরক্ত করার প্রবণতা দূর করতেই নাকি ‘শুকাটসু’ উৎসবের শরণাপন্ন হচ্ছেন জাপানিরা।