রমজানে বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না গরুর মাংস
খুলনা শহরে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দামে গরুর মাংস মিলছে না। প্রতি কেজি মাংসের দাম ৪৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও বেশির ভাগ দোকানে তা বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৪৮৫ টাকায়। অধিকাংশ মাংস বিক্রির দোকানে নেই মূল্যতালিকাও।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার শহরের কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে। খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) রমজান মাসে বিক্রির জন্য প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৪৭০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল।
নগরের ময়লাপোতা মোড়ের অদূরে ফারাজীপাড়া এলাকায় ৯-১০টি মাংস বিক্রির দোকান আছে। সেখানকার হাজী মিট শপ নামের দোকানের মালিক আনোয়ার সরদার। তিনি এক কেজি মাংসের দাম চাইলেন ৪৮৫ টাকা। সিটি করপোরেশনের দামের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন কত দাম বেঁধে দিছে তা জানিনে। বিক্রি করছি ৪৮০ টাকায়। তবে কাঁচামাল দাম একটু বেশি না চাইলে হয়!’ তিনি বলেন, ‘কেসিসি যদি ৪৭০ টাকা দাম বেঁধে দেয়, তবে আমাদের তো লোকসান না বরং লাভ। কারণ, মাঝে মাঝে ৪৫০-৪৬০ টাকায়ও তো বেচা লাগে।’
সেখানকার ‘মুন্না মিট শপ’ নামের দোকানে একটি ছোট বোর্ডে মূল্যতালিকায় লেখা ‘গরু গোস্ত=৪৮০ টাকা’। ওই দোকানের মালিক মুন্না নিজেকে পরিচয় দেন মহানগর মাংস ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক হিসেবে। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন ৪৮০ টাকাই রেট ঠিক করেছে। সেখানকার কর্মকর্তারাই তো এই দামে কিনে নিয়ে গেলেন।’
ওই দোকানের একজন ক্রেতা মাহমুদ হাসান বলেন, ‘বেঁধে দেওয়া দামের ব্যাপারে কিছু তো জানি না। কেসিসি ৪৭০ টাকা বেঁধে দিয়ে থাকলে সবাই তো বেশি দামে বিক্রি করছে। করপোরেশন তা হলে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে!’
শহরের নতুন বাজার, রূপসা ট্রাফিক মোড় ও রূপসা কাঁচাবাজার এলাকার মাংসের দোকানগুলোতেও ৪৮০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে।
রূপসা ট্রাফিক মোড় এলাকার মাংস বিক্রেতা হাবিব বলেন, কিছু করার নেই। পয়লা বৈশাখের পর থেকে ৪৭০-৪৮০ টাকা চলছে। গরু কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তবে গরুর মাংস কেনায় ক্রেতাদের আগ্রহ কিছুটা কম।
সেখানে মাংস কিনতে আসা সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘খাদ্যতালিকা থেকে কবেই বাদ দিয়েছি ইলিশ। গরুর মাংসটাও বোধ হয় তালিকাতে আর বেশি দিন রাখতে পারব না। এক কেজি মাংস যদি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা হয়, তাহলে বাকি যা খাওয়া লাগে তা বন্ধ করতে হয়।’
গল্লামারী ও বানরগাতি এলাকার মাংসের দোকানগুলোতে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম রাখা হচ্ছে ৪৮০-৪৮৫ টাকা। গল্লামারী এলাকায় মাংস কিনতে আসা আবদুর রকীব হোসেন বলেন, ‘আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষদের অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, কবে কে দাওয়াত দিবে আর সে দাওয়াতে গরুর মাংস খাব, সে ভরসা করতে হবে।’
খুলনা সিটি করপোরেশনের বাজার তত্ত্বাবধায়ক গাজী সালাউদ্দিন বলেন, কেসিসি গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪৭০ টাকা, মাদি ছাগলের মাংস ৬৫০ টাকা আর খাসির মাংস ৭০০ টাকা দর নির্ধারণ করেছে। কেউ বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি রাখলে সেটা অন্যায়।
কেসিসির বাজারমূল্য পর্যবেক্ষণ, মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাবেয়া ফাহিদ হাসনাহেনা বলেন, ‘খুলনা সিটি করপোরেশন থেকে দুটি টিম বাজার তদারক করছে। আমরা চেষ্টা করছি সব পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে। গরুর মাংসের দোকানদারদেরও নির্ধারিত দাম রাখার কথা বলে দেওয়া হয়েছে। রোববার মাংসের দোকানগুলো তদারকি করা হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন