বেপরোয়া গাড়ি ঠেকাতে মহাসড়কে বসবে ক্যামেরা
বেপরোয়া গাড়ি চালনা আর যত্রতত্র ওভারটেকিং রোধসহ ট্রাফিক আইন মানাতে মহাসড়ককে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) আওতায় আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এই কাজটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
ট্রাফিক আইন মানাতে বাধ্য করতে এ বিষয়ে আরও বেশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানোর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে এ বিষয়ে সচেতনতা গড়তে বিশেষ কর্মসচি নেয়ার।
সোমবার ট্রাফিক ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে গঠিত উচ্চ-পর্যায়ের কমিটির প্রথম সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে এই সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান।
বৈঠক শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় সারাদেশের সড়ক, মহাসড়কগুলোকে সিসিটিভি ক্যামেরার নেটওয়ার্কের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নেবে।
সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে যত মৃত্যু হয় তার সিংহভাগই হয় মহাসড়কে। আর সবচেয়ে বেশি মানুষ নিহত হয় আবার রাস্তা পারাপারে। এর বাইরে মাত্রাতিরিক্ত গতিও একটি প্রধান কারণ। জটিল পরিস্থিতিতে বেপরোয়া চালক গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না আর এতে ঘটে প্রাণঘাটি দুর্ঘটনা।
নির্ধারিত গতিসীমার বাইরে যান চালানো ঠেকাতে হাইওয়ে পুলিশের হাতে স্পিডগানও দেয়া হয়েছে। তবে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে প্রতিটি গাড়ির গতি মাপা সম্ভব নয় কোনো মতে। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে বৈঠকে। এই ক্যামেরায় ধারণ করা থাকবে ২৪ ঘণ্টার ছবি। ফলে কোনো গাড়ি গতিসীমা না মানলে বা অন্য কোনো আইন অমান্য করলে পরেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
এই বিষয়টির পাশাপাশি রুট পারমিটহীন যানবাহন যাতে রাস্তায় চলাচল করতে না পারে এবং ট্রাফিক আইন সঠিকভাবে পরিপালন করা হয় তার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম আরও জোরদার করারও নির্দেশও দেয়া হয় বৈঠকে।
গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের পর টানা ছয় দিন রাজপথে অবস্থান নিয়ে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। আর সরকার তাদের দাবি পূরণে আশ্বাসও দিয়েছে।
তবে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আর নানা উদ্যোগের বিষয়। আর সরকার জোর দিয়েছে ট্রাফিক আইন মানার বিষয়টি।
এরই মধ্যে লাইসেন্স ছাড়া চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত ট্রাফিক সপ্তাহে বিপুল পরিমাণ মামলাও হয়েছে।
তবে ট্রাফিক আইন মানার বিষয়ে পথচারীদের অনীহার বিষয়টিও সামনে এসেছে। ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া আক্ষেপ করে বলেছেন, ৯০ শতাংশ মানুষ ট্রাফিক আইন মানতে চায় না। এই পরিস্থিতিতে জনসচেতনতা তৈরিতেও কাজ করতে হচ্ছে সরকারকে।
এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একাধিক বৈঠকে এ বিষয়ে স্কাউটস ও গার্ল গাইডকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে ওভারপাস আছে, সেখানে নিচ দিয়ে রাস্তা পারাপার ঠেকাতে চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও।
আজকের বৈঠকেও এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা হয়েছে আর সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় ঈদুল আযহার আগে ও পরে ঢাকাসহ সারাদেশের সড়ক দুর্ঘটনা এবং সার্বিক পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
এ সময় সড়কে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয় এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনাও জানানো হয়।
দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দেয়া হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন