বয়স ধরে রাখতে চান? তাহলে এই খাবারটি খান…

বয়স বাড়ে বাড়ুক, কিন্তু ত্বক এবং শরীরের ওপর যেন তার কোনো প্রভাব না পড়ে। এমনটাই যদি হয় আপনার মনের ইচ্ছা তাহলে নিয়মিত পালং শাক খান। কারণ এতে আছে লুটেইন নামের একটি উপাদান, যা বয়স বাড়ার গতি কমিয়ে দেয়।

তাই ৩০-এর পর থেকে ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষ সবারই ডায়েটে এই শাকটি থাকা আবশ্যক! বয়স ধরে রাখতে চান? তাহলে পালং শাক খান।প্রসঙ্গত, বয়স ধরে রাখতে এবং সৌন্দর্য বাড়াতে লুটেইন নামক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা নিলেও দুঃখের বিষয় হলো শরীর এই উপাদানটি তৈরি করতে অক্ষম। ফলে বাইরে থেকেই এর যোগান দেওয়াটা জরুরি।

সম্প্রতি ফ্রন্টিয়ারিং ইন এজিং নিউরোসায়েন্স নামক জার্নালে একটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে লুটেইন যে শুধুমাত্র শরীর এবং ত্বকের বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করে তা নয়। সেই সঙ্গে কগনিটিভ এবিলিটি বা জ্ঞানীয় সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আরও নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। যেমন ধরুন…

১. পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে
১০০ গ্রাম পালং শাকে প্রায় ৫৫৮ এম জি পটাশিয়াম থাকে, যা দিনের চাহিদার প্রায় ১৬ শতাংশ পূরণ করে। প্রসঙ্গত, পেশির গঠনের পাশাপাশি হাড়কে শক্তপোক্ত করতে পটাশিয়ামের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। সেই সঙ্গে কিডনি স্টোন এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২. ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে
শরীর যাতে ঠিক মতো প্রোটিন গ্রহণ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখে পালং শাকে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম। শুধু তাই নয়, নার্ভের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ব্লাড প্রেসার এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয় এই খনিজটি।

৩. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমায়
পরিসংখ্যান বলছে আমাদের দেশের নারীদের বিশাল অংশ অ্যানিমিয়ার মতো রোগের শিকার। আর এর পেছনে মূল কারণ হলো আয়রনের অভাব। তাই আমাদের যত বেশি করে সম্ভব পালং শাক খেতে হবে। কারণ পালং শাকে উপস্থিত প্রচুর মাত্রায় আয়রন, দেহে এই বিশেষ খনিজটির অভাব পূরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৪. পালং শাক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। সুতরাং প্রতিদিনের ডায়েটে এই শাকটির অন্তর্ভুক্তি আবশ্যক! আসলে পালং শাকে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, লুটেইন, বিটা-ক্যারোটিন এবং জিয়া-এক্সেনথিন। এই সবক’টি উপাদানই শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেওয়ার পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটিয়ে শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৫. প্রোটিনের ঘাটতি মেটায়
১০০ গ্রাম পালং শাকে প্রায় ২.৯ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা খুব সহজেই শরীরের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, অন্য যেকোনো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের তুলনায় পালং শাক সহজে হজম হয়ে যায়। ফলে খুব কম সময়ে প্রোটিন শরীরের কাজে লেগে যাওয়ার সুযোগ পায়।

৬. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে চোখের ক্ষমতা কমতে শুরু করে। এই ধরনের সমস্যাকে চিকিৎসকরা ম্যাকিউলার ডিজঅর্ডার নামে ডেকে থাকেন। এমনটা আপনার সঙ্গেও হোক, তা কি চান? না চাইলে পালং শাকের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফেলুন। বেঁচে যাবেন। কারণ কি জানেন? এই শাকটির শরীরে প্রচুর মাত্রায় রয়েছে জিয়া-এক্সেথিন নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর লুটেইন, রেটিনার যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে।

৭. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
হার্টকে সুস্থ রাখতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই উপাদানটি রয়েছে পালং শাকেও। সুতরাং যাদের পরিবারে হার্ট অ্যাটাক বা কোনো ধরনের হার্টের রোগের ইতিহাস রয়েছে তারা নিয়মিত পালং শাক খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।

৮. ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজে লাগে
পালং শাকে ক্লোরোফিল নামে একটি উপাদন থাকে, যা শরীরে উপস্থিত কার্সিনোজেনিক এলিমেন্টদের ধ্বংস করে। ফলে ক্যান্সার কোষের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমে। এখানেই শেষ নয়, যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে এই শাকটিতে প্রচুর মাত্রায় রয়েছে ভিটামিন এ। এই উপাদানটি ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।–বোল্ডস্কাই