ভারতের যৌনপল্লিতে বাংলাদেশি তরুণীর দুর্বিষহ জীবন
দালালে খপ্পরে পরে মেঘাচ্ছন্ন এক বিকেলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হন পায়েল (১৬)। সেটা এখন থেকে তিন বছর আগে। দালালরা তাকে বলেছিল সেখানে নাচের শিক্ষকের চাকরি নিয়ে দেবে। নাচের শিক্ষকের চাকরি তো দূরে থাক; এর চেয়ে নিম্ন চাকরি দিলেও তো হতো! পায়েলকে বেচে দেয়া হলো দেশটির পুনে রাজ্যের মহারাষ্ট্রের এক যৌনপল্লিতে।“কি যে সেই যন্ত্রণা! দিনের পর দিন অগণিত পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনে বাধ্য করা হতো’ বলছিলেন পয়েল। এখানেই শেষ নয়, যদি কোনো দিন যৌন মিলনে যেতে না চাইতাম তাহলে প্রচন্ড মার দিতো, ঘরের ভিতরে আটকে রাখতো।”
গত নয় মাস আগে মহারাষ্ট্রের ওই যৌনপল্লি থেকে পায়েলকে উদ্ধার করেছে থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন। এরপরই তাকে ওই সংস্থাটির আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এখন তিনি মনে করছেন হয়তো যে কোনো দিন বাবা মায়ের কাছে ফিরে যেতে পরবেন।
বাংলাদেশের হাই কমিশন নয়া দিল্লির কূটনৈতিক মোশাররফ হোসাইন জানান, ‘বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে আসা অনেক ছেলে-মেয়েকেই আমরা উদ্ধার করেছি। তবে তাদের দেশে পাঠাতে একটু সময় লাগছে, কারণ প্রক্রিয়াটি এখনো অনেক জটিল।’
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই কূটনৈতিক জানান, ‘বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে অবৈধ পথে আসছে চায় তাদের কাছে আমাদের সতর্কবার্তা হলো- কিছু দিন আগে কেরেলায় ভারত সরকারের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে এক ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে দেখা করেছি; যিনি সাত বছর হলে দেশে ফেরার জন্য অপেক্ষা করছেন।’
গত বছরে দেশটির সব আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন মোশাররফ হোসাইন। দুই সপ্তাহ আগে পুনের ওই আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে পয়েলের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। পায়েল তার কাছে সব কথা খুলে বলেছেন। এর পর তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সনাক্ত করেছেন এই কূটনৈতিক।
পায়েল বলেছেন, ‘দেশ আমার মা আমার জন্য অপেক্ষা করছেন, তিনি কাঁদছেন। তাকে বলেছি শিগগিরই আমাদের দেখা হবে। তাবে এখন আমি এখানে খারাপ নেই। আমি খুবই খুশি যে সেই অন্ধকার জায়গা থেকে ফিরে দেশে ফিরতে পারবো বলে।’
বাংলাদেশের এই কূটনৈতিক পুলিশের ডিআইজি ছিলেন। তিনি বলেন, মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে পাচার হওয়া ৪৩৮জন তরুণ-তরুণীকে শুধু মহারাষ্ট্র থেকে উদ্ধার করে দেশে পাঠানো হয়েছে। সূত্র: এনডিটিভি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন