ভিড় কমছে না বইমেলার শিশু চত্বরে

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। মাসব্যাপী মেলার অর্ধেক সময় চলে যাওয়ায় প্রকৃত ক্রেতাদের পদচারণা বেশি। ক্রেতাদের ভিড়ে শিশুদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। শিশু কর্নার তথা ‘শিশুপাড়ার’ চিত্র দেখে প্রকাশকদের চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে।

মেলা শুরুর পনের দিনে লোকসমাগমে ‘উত্থান-পতন’ ছিল। কিন্তু শিশু চত্বরে প্রতিদিনই কমবেশি ভিড় ছিল। শিশুপ্রহরসহ বিশেষ দিনগুলোতে শিশু চত্বরে পা ফেলার জায়গা থাকে না। লোকশূন্যতার দিনেও শিশু চত্বর ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। অভিভাবকদের সঙ্গে শিশু-কিশোরদের উপস্থিতির চোখ জুড়ানো দৃশ্য দেখা গেল শনিবার মেলার ১৭তম দিনেও।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ছিল মেলার ষষ্ঠ শিশুপ্রহর। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুদের কোলাহলে ভরে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। বই কেনার চেয়ে বিনোদনের অনুষঙ্গ সিসিমপুরের টুকটুকি-হালুমদের সঙ্গে ফুর্তিতে মেতে ওঠার আগ্রহ শিশুদের কাছে কম ছিল না।

মিরপুর থেকে মেলায় আগত ফারহানা রশিদ তার ৭ বছরের ছেলে রিহানকে সঙ্গে নিয়ে মেলায় এসেছেন গতকাল। তিনি জানালেন, এর আগেও একদিন ছুটির দিনে মেলায় এসেছিলেন। ছেলের ইচ্ছায় গতকাল আবার এসেছেন। তিনি বলেন, আগের শুক্রবার শিশুপ্রহরের কথা শুনে রিহানকে নিয়ে মেলায় এসেছিলাম। ও খুব মজা করেছে। মেলা ছেড়ে যেতেই চায় না। বিশেষ করে শিশুদের জন্য যে বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে, সেটা ওর ভালো লেগেছে।

শিশু চত্বরের প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বই বিক্রি হচ্ছে বেশ। নানা রঙের মলাটে ভ‚ত, পরি, বাঘ-ভালুকের ছবি সংবলিত শিশুতোষ বইয়ে ভর্তি শিশু চত্বর। আছে বাচ্চাদের গল্প শোনার ছলে পড়ালেখা শেখার উপযোগী বইও। সাধারণত প্রচ্ছদ দেখে শিশুরা বায়না করছে বই কেনার। যার যে প্রচ্ছদ পছন্দ হচ্ছে, সে সেটা কিনতে চাইছে।

শিশু চত্বরের প্রকাশনী ‘জ্ঞান বিতান’-এর বিক্রয়কর্মী মারুফ হোসেন জানালেন, শিশুদের বই সাধারণত ওরা নিজেরাই পছন্দ করছে। এর বাইরে অভিভাবকরাও নিজেদের পছন্দসই বই শিশুদের জন্য কিনছেন।

গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’-এর চতুর্থ খণ্ড : বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অবলম্বনে ‘মুজিব ৪ : দিলি­ অভিযান’ গ্রাফিক নভেল প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। এটি নভেলের চতুর্থ খণ্ড। এতে বঙ্গবন্ধুর দিলি­ ভ্রমণকে বাচ্চাদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।

গতকাল সকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের সিআরআইয়ের স্টলে ‘মুজিব ৪ : দিলি­ অভিযান’ নভেলটির মোড়ক উন্মোচন করেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, বইটির প্রকাশক ও সিআরআইয়ের ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

নতুন বই : বাংলা একাডেমির দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল গ্রন্থমেলায় নতুন বই প্রকাশ হয়েছে ২২১টি। কাব্যগ্রন্থ ৮৩টি, উপন্যাস ২৫টি, গল্পগ্রন্থ ৩৯টি ও অন্যান্য বিষয়ক গ্রন্থ ৭৪টি। এর মধ্যে ধ্রব এষের উপন্যাস ‘আগত’ (ঐতিহ্য), সুমন্ত আসলামের গোয়েন্দ কাহিনী ‘শত্রুর কবলে পাঁচ গোয়েন্দা’ (কথাপ্রকাশ), নির্মলেন্দু গুণের কাব্যগ্রন্থ ‘নির্বাচিত কবিতা’ (ইন্তাসিন প্রকাশন), আশুতোষ ভৌমিকের কাব্যগ্রন্থ ‘নদী কিংবা বালুচর’ (কালো) ও ফারজানা মিতুর উপন্যাস ‘পরকীয়া’ (দেশ পাবলিকেশন্স) অন্যতম।

আজকের অনুষ্ঠান : আজ ১৮তম দিন বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘এএফ সালাহ্উদ্দীন আহ্মদ\মুজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী\একে নাজমুল করিম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মুনতাসীর মামুন, মীজানূর রহমান শেলী এবং সোনিয়া নিশাত আমিন। সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।