ভূট্টা ডাটা ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক

হঠাৎ দুপুরের রৌদ্র থমকে গিয়ে হালকা বাতাস আর কালো মেঘের আচ্ছন্নতায় অন্ধকার নেমে আসে। শুরু হয় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। মেঘের অস্বাভাবিক কিছুটা আবহাওয়ায় শুরু হয় কৃষাণ কৃষাণীর মাঠ থেকে ভুট্টা ডাটা ঘরে তোলা নিয়ে দৌড়-ঝাপ আর ব্যস্ততা।

মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে উপজেলার নেকমরদ ঘনেশ্যামপুর তাতী পাড়া এলাকার কৃষক আবুল হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন মিলে ভুট্টা ডাটা শুকনা খড়ি হিসাবে বাড়ির উঠনে এনে জাক করে রাখছেন। বিশেষ করে কালো মেঘ আর হালকা বাতাসের আবহাওয়ায় দেখেই এ পরিবারের লোকজনের ছোটাছুটি।
জানা যায়, শুধু আবুল হোসেন নয় এ এলাকার প্রায় সব কৃষকই বর্ষাকালকে সামনে রেখে পুরো এক বছরের রান্নার চুলোয় জ্বালানি হিসেবে শুকনো ভূট্টা ডান্ডি বা গাছকে সংগ্রহ করছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নেকমরদ ঘনেশ্যামপুর তাতী পাড়ার মাঠ জুড়ে শুকনো ভুট্টা ক্ষেত নিরব হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ।এদিকে কৃষক নরেনের ৫ বিঘা,ওলেনের ৫ বিঘা, সুসেনের ৩ বিঘা এবং ফরিদ নামে এক কৃষকের ২ বিঘা ভূট্টা ডাটা মাঠ থেকে কেটে বাড়িতে সংরক্ষণের জন্য তারা সবাই ব্যস্ত সময় পার করেছেন ।

কৃষকরা ভূট্টা ঘরে তোলার পর অবশিষ্ট ডাটা আর পাতা শুকিয়ে হলদে-খয়েরী রঙে অপরুপ স্বর্ণালী দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে।কৃষকের মাঠ জুঁড়ে গাছ থেকে ভূট্টা ছাড়িয়ে নেওয়ার পর দাঁড়িয়ে থাকা শুকনো ডাটা স্বর্ণালী রুপে ডাটা এখন অবহেলিত শুধুমাত্র কৃষকের চুলোই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।

ওই এলাকার কৃষকরা বলছেন, ভুট্টা ঘরে তোলার পর শুধুমাত্র রান্না করার জ্বালানি হিসেবে ভুট্টা গাছ ব্যবহার করছেন তারা । এছাড়া তেমন কোন কাজে আসেনা । জয়দুল নামে তাতী পাড়ার এক কৃষক বলেন, তিনি বিক্রির জন্য ভুট্টা ক্ষেত থেকে ডাটাখড়ি সংগ্রহ করছেন। মাহেন্দ্র ট্রাক প্রতি ২ হাজার টাকায় বিক্রি করবেন বলে জানান তিনি। তবে গত বছর তিনি খড়ি হিসেবে শুকনো ভুট্টা ডাটা এভাবেই বিক্রি করেছেন। এবারও তিনি এমন দামে ডাটা বা খড়ি বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান।

ওই এলাকার অন্যান্য কৃষকরা বলছেন, আমাদের কাছে ডাটা কেউ কিনতে চায় না। হয়তো প্রয়োজনের তাগিদের দু”একজনকে নামে মাত্র টাকায় বিঘা প্রতি বিক্রি করতে দেখা যায়। অবশ্য তারা মাঠ থেকেই নিজেরাই ভুট্টার খড়ি কেটে নিয়ে যান।

রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথ বলেন , উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নে কৃষকরা ভূট্রার ডাটা থাকাকালীন জমিতে সব্জী হিসেবে ঝিঙগা আবাদ করছেন। সেসব কৃষক লাভবানও হচ্ছেন। আবার অনেকেই ভূট্টার ডাটাকে রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে সংরক্ষণ করছেন। তিনি আরো জানান, ‘গত বছর আবাদ হয়েছিল এ উপজেলায় ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর।

এ বছর ভুট্টার আবাদ প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে ভূট্টার আবাদ হয়েছে। আগাম যেসব কৃষক ভূট্টা বিক্রি করেছেন তারা বেশ লাভবান হয়েছেন। আবহাওয়ার জন্য এখন দাম কিছুটা কম হতে পারে।’