মানুষ তার ধর্ম পালন করবে স্বাধীনভাবে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ, এখানে সব মানুষ তার ধর্ম পালন করবে স্বাধীনভাবে। আমাদের সংবিধানে সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমাদের ইসলাম ধর্মও সেই কথাই বলে। নবী কারিমও (সা.) বলেছেন, ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।’ আমরাও চাই, কেউ যেন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে। সব মানুষ যেন শান্তিতে বসবাস করতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাসেল ছোটবেলা থেকে সহজ-সরল ছিল। তার কোনো দাবি ছিল না। তার স্বপ্ন ছিল, বড় হয়ে সেনা অফিসার হবে। সে কারণে ছোটবেলা থেকেই টুঙ্গিপাড়ায় শিশুদের নিয়ে প্যারেড করতো। প্যারেড করার পর তাদের পুরস্কার হিসেবে এক টাকা করে দিতো। সবাইকে জামা-কাপড়ও কিনে দিতো।
তিনি বলেন, আজ রাসেল নেই। কিন্তু এ দেশের হাজার হাজার শিশু যেন নিরাপত্তা পায়। তারা যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। মানুষের মতো মানুষ হতে পারে। তারা যেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়। সুকান্তের ভাষায় বলি, ‘এ বিশ্বকে বাসযোগ্য করে যাবো আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার অঙ্গীকার।’ বিশ্বকে পারবো কিনা জানি না- এ দেশকে যেন শিশুদের জন্য নিরাপদ করতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ করছি। সবাই দোয়া করবেন।
সরকারপ্রধান বলেন, সব শিশু যেন সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে সে ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। এ দেশের শিশুরা যেন আর নির্মমতার শিকার না হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও এখনো সেটি দেখছি। খালেদা জিয়ার বিএনপি গাড়িতে আগুন দিয়ে বাপের সামনে শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে।
সুশীল সমাজের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানতবতার প্রশ্ন যারা তোলে, তারা যেন এসব ঘটনা দেখে যে বাংলাদেশে কী ঘটতো?
তিনি বলেন, সরকারে আসার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা- কোনো শিশু রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে না। তাদের যেন একটা ঘর থাকে। তারা যেন একটু ভালোভাবে বসবাস করতে পারে। আমাদের একটাই লক্ষ্য, এ দেশের প্রতিটি মানুষ একটা ঘর পাবে, শিক্ষা পাবে, চিকিৎসা পাবে, ভালোভাবে বাঁচবে। শিশুরা যেন তার মেধাজ্ঞান ও বুদ্ধি বিকশিত করতে পারে সেই চেষ্টাই আমরা করে যাচ্ছি। কারণ এত রক্তক্ষয়, এত কিছু ঘটে গেছে। আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি আমাদের দেশ ভৌগোলিক সীমারেখায় ছোট হলেও জনসংখ্যা অনেক। সেই দেশেই আমি চাই, প্রত্যেকটা মানুষের জীবন যেন সুন্দর হয়, উন্নত হয়। প্রত্যেকটা মানুষ যেন তার অন্ন-বস্ত্র ও উন্নত জীবন পায়। এটাই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। সেটা যেন পূরণ করতে পারি, এটাই আমাদের লক্ষ্য।
জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনী পরিচালনায় দক্ষ দাবিদারদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ থেকে ৮১’র মধ্যে ১৯টা ক্যু হয়েছিল। সেই সময়ের সেনাবাহিনী ডিসিপ্লিন দাবি করে কীভাবে? জিয়াউর রহমান শুধু জাতির পিতাকেই হত্যা করেনি, হাজার হাজার সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের ওপর জিয়ার অত্যাচারের খড়গ পরে তার দলও অব্যাহত রেখেছে।’
শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন