মাসুদ আজহার জাতিসংঘের কালো তালিকাভুক্ত
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে কালোতালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি কমিটি। কূটনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে চীন আপত্তি উঠিয়ে নিলে বুধবার তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।-খবর রয়টার্সের
পশ্চিমা দেশগুলো বহু বছর ধরে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু পাকিস্তানের মিত্র চীন সেই চেষ্টাকে নিরুৎসাহিত করে বারবার বাগড়া দিয়ে যাচ্ছিল। ভারতে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের হামলার জন্য জইশ-ই-মোহাম্মদকে দায়ী করা হচ্ছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় এক কাশ্মীরি তরুণের আত্মঘাতী হামলায় একটি ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর ৪০ জওয়ান নিহত হন। ওই হামলার জেরে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এক পশলা আকাশ যুদ্ধের ঘটনাও ঘটে গেছে। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে জইশ-ই-মোহাম্মদ।
পাকিস্তানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্পর্কের সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক জায়গাটি হচ্ছে মাসুদ আজহারের স্বাধীনভাবে চলাফেরা। ভারতও দাবি করে আসছিল, পররাষ্ট্র নীতির এজেন্ডায় অনেক বেশি সুবিধা পেতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে ও ব্যবহার করছে ইসলামাবাদ। যদিও পাকিস্তান সবসময় এসব দাবি অস্বীকার করে আসছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে জইশ-ই-মোহাম্মদের ওপর অস্ত্র, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও তাদের সম্পদ জব্দ করতে নিরাপত্তা পরিষদের ইসলামিক স্টেট এবং আলকায়েদা নিষেধাজ্ঞা কমিটির কাছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স দাবি জানিয়েছে।
কিন্তু ১৫ সদস্যের কমিটির সেই উদ্যোগে আপত্তি তুলে থামিয়ে দেয় চীন। সব সদস্যের ওপর ঐকমত্যের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয় এই কমিটি। ২০১৬ ও ২০১৭ সালেও মাসুদ আজহারের ওপর নিষেধাজ্ঞায় আপত্তি তুলেছিল চীন।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং এক বিবৃতিতে বলেন, জাতিসংঘের পর্যালোচিত প্রস্তাব পরীক্ষা করে মাসুদ আজহারকে কালোতালিকাভুক্তকরণের ওপর থেকে বেইজিং আপত্তি তুলে নিয়েছে। বিষয়টি এখন যথার্থভাবে সমাধান হয়েছে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের ব্যাপক অবদান আছে বলে আমি জোর দিয়ে বলতে চাই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সেটাকে সম্পূর্ণভাবে স্বীকার করে নেয়া। সন্ত্রাসবাদী ও উগ্রপন্থী শক্তির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের লড়াই চেষ্টায় চীনের জোর সমর্থন রয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণ হিসেবে পুলওয়ামা হামলার যোগসূত্র ও ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিদ্রোহের সংশ্লিষ্টতা বাদ দেয়ার পরেই পাকিস্তান জাতিসংঘের এই উদ্যোগে একমত হয়েছে। কাশ্মীরের বিদ্রোহকে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আদায়ের লড়াই বলে মনে করে পাকিস্তান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন