মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা : ভারতকে খালেদার ধন্যবাদ

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোয় ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সবাই একসঙ্গে মিলে মিশে থাকার ইচ্ছার কথাও বলেছেন তিনি।

রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সংগঠন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক সমাবেশে এই কথা বলেন বিএনপি নেত্রী।
বাংলাদেশকে স্বাধীন করার এই যুদ্ধে কয়েক হাজার ভারতীয় সেনাও নিহত হয়। তবে এই বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতারা কখনও প্রকাশ্যে কোনো কথা বলেননি। এই প্রথম বিষয়টি তুললেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অপারেশন সার্চ লাইট শুরু হওয়ার পর থেকেই শুরু হওয়া বাংলাদেশের প্রতিরোধ যুদ্ধে ভারতের সহায়তা ছিল। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে ছুটে যাওয়া প্রায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। পাশাপাশি মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ, তাদেরকে অস্ত্র ও রসদও সরবরাহ করেছে দেশটি। সে সময় ভারত সরকার বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনেও সহায়তা করেছে।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল শপথ নেয়া স্বাধীন বাংলা সরকার যুদ্ধ পরিচালনা করেছ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকেই। তাদের আবাসন এবং কার্যালয়ের ব্যবস্থাও করেছিল ভারত।

মুক্তিযুদ্ধের শেষে ভারতীয় সেনাবাহিনী সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয় পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। আর ডিসেম্বরের শুরুতে মুক্তিবাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনীর অধীনে গিয়েই যুদ্ধ করতে থাকে। আর ১৬ ডিসেম্বর যৌথ কমান্ডের কাছেই আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এরপরই অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান আছে। আমাদের দেশে বহু লোক, মুক্তিযোদ্ধাদের তারা আশ্রয় দিয়েছে এ জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ দেব। আমরা চাই সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ থাকব।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ঘোষণাতেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল বলেও দাবি করেন খালেদা জিয়া। জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগে। তারা সত্যকে গোপন করতে চায়।’

‘জিয়াউর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ ও সেনাবাহিনীর লোকজন মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এটা শুধু দেশ নয়, বিদেশের লোকজনও জানে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পারে শুধু মিথ্যা কথা বলতে, বাজে কথা বলতে। এভাবে দেশ চলতে পারে না।’

আওয়ামী লীগ নিজেকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করলেও তারা মুক্তিযোদ্ধাদের এই সমাবেশে অনুমতি দিতে চায়নি বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেত্রী।

‘এরা মুক্তিযোদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে। কিন্তু আজকে এই সমাবেশের প্রথমে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দিলেও তা বাতিল করে আজকে দুপুরে নাট্যমঞ্চে অনুমতি দেয়। এই হলো মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের সম্মান।’

বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের প্যারেড অনুষ্ঠান ও বঙ্গভবনে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, বিজয় দিবসে সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমকে (২০ দলের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান) দাওয়াত দেয়ার পরও বঙ্গভবনে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এই হলো অবস্থা।’