যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক হত্যাচেষ্টা মামলার রায় আবারও পেছালো

বেসরকারি গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার শাকিল হাসান ও ক্যামেরা পারসন শাহীন আলমকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় দ্বিতীয় বারের মতো পেছালো। রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আগামী ৮ নভেম্বর রায় ঘোষণার নতুন তারিখ ধার্য করেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে, গত ২০ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় পরবর্তী তারিখ হিসেবে ১৮ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আদালত।

এর আগে, গত ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালত উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২০ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী এখলাছ উদ্দিন ভুঁইয়া যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার সময় ক্যামেরায় ধারণ করা চার মিনিটের ফুটেজ আদালতে দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, আসামি রহিম, জব্বার, জাকিরের নেতৃত্বে অন্যান্যরা হামলা করছে। এই আসামিদের শনাক্ত করে ছবিও আদালতে দাখিল করা হয়েছে। যাতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয় রহিম, জব্বার, জাকিরের নেতৃত্বে শাকিল ও শাহিনকে মারধর করে ও পরে শাকিলকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা করে।

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু যুক্তিতর্ক শুনানিতে বলেন, দুই সাংবাদিক চাঁদা চাইতে গেলে ব্যবসায়ী নেতারা তাদের মারধর করে। কিন্তু কোনও ব্যবসায়ী নেতাকে আসামিপক্ষ সাফাই সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করেনি।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক শাকিল হাসান বলেন, দায়িত্বরত সাংবাদিকের ওপর হামলার অর্থ শুধু ব্যক্তিগতভাবে কাউকে আক্রান্ত করা নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর হামলা। এ হামলার মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা আক্রান্ত হয়েছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে মামলাটি চালাচ্ছি, কারণ আমি প্রমাণ করতে চাই সাংবাদিকের ওপর হামলা হলে বিচার হয়। এর আগে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডসহ অসংখ্য সাংবাদিক নিপীড়নের ঘটনায় আমরা কোনও বিচার হতে দেখিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর রাজধানীর চকবাজারে দেবীদাস লেনে অবৈধ পলিথিন ব্যাগ তৈরির অবৈধ কারখানা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে হামলার শিকার হন যমুনার সিনিয়র রিপোর্টার শাকিল হাসান ও ক্যামেরা পারসন শাহীন আলম। হামলা থেকে বাঁচতে তারা একটি মুদি দোকানে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা শাকিল হাসানের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন বাধা দেওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান শাকিল।

এ ঘটনায় শাকিল হাসান বাদী হয়ে চকবাজার থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। দুই আসামি গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিনে বেরিয়ে যান তারা।