যে কারণে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসছে আ.লীগ

বল অন্যের কোর্টে দিতে চায় না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আলোচনায় রাজি নন বা সংকট সমাধানে আওয়ামী লীগ আন্তরিক নয় এমন দুর্নাম ঘাড়ে নিতে চান না শাসক দলের নীতিনির্ধারকরা। তাই দায় এড়াতে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষস্থানীয় সূত্রের সঙ্গে কথা বলে এমন মনোভাব পাওয়া গেছে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী তার উদার দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই সংলাপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০১৪ সালে তিনি যেভাবে সৃষ্ট সংকটের সমাধানে উদ্যোগী ছিলেন, এবারও সেই ভূমিকা নেবেন। বিরোধী শক্তিগুলোর বক্তব্য তিনি শুনতে চান। ফলাফল যাই হোক তিনি এসব গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। এর অংশ হিসেবেই শেখ হাসিনা সংলাপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জানা গেছে, সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিষয়টি তোলেন। অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি অন্য মন্ত্রীদের উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা নিশ্চয় জানেন, ঐক্যফ্রন্ট সংলাপে বসতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে। তারা কী বলতে চায়, শোনা উচিৎ। প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত মন্ত্রীদের কাছে এ বিষয়ে মতামত চান। তখন অন্য মন্ত্রীরাও ইতিবাচক মতামত দেন।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের দু’জন নেতা জানান, তারা সংলাপের বিষয়ে কিছু জানেন না।

দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এ সম্পর্কে তার কিছু জানা নেই। তবে, প্রধানমন্ত্রী যে উদার গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি লালন করেন সেটারই প্রতিফলন ঘটেছে এই সিদ্ধান্তে। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে যে কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, সংলাপ হবে, এমন সিদ্ধান্ত জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার পর দলের সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয় থেকে সংসদে যান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেখানে তার দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্তে কথা হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য এবং গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ফোন করে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আমন্ত্রণ জানান। এ সময় তিনি মন্টুর কাছে কতজন আসতে পারেন তা জানতে চান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নেতা জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। দলে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও আলোচনা হয়নি। তবে, প্রধানমন্ত্রী নিজে আলোচনার বিষয়ে আন্তরিক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ৭ দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপের দাবি জানিয়ে গত রবিবার চিঠি দেয় ঐক্যফ্রন্ট। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ করবেন।