যে কারণে বহিষ্কৃত হলেন বিকল্পধারা’র সভাপতি বি. চৌধুরী
শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান ও যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরীকে অব্যাহতি দিয়েছে বিকল্পধারা বাংলাদেশ।
বিকল্পধারা বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নুরুল আমীন বেপারীকে সভাপতি এবং দলের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদলকে মহাসচিব করে দলটি নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার বেলা ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান নুরুল আমীন ও বাদল।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা বলেন, আমরা গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ রুদ্ধ গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনকে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্লাটফর্মে রূপ দেয়ার জন্য লাগাতার চেষ্টা করে চলেছি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন পথচলা শুরু করে।
বাংলাদেশ বিকল্পধারা, বাংলাদেশের নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট, গণফোরাম ও বিএনপি বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নতুন রাজনৈতিক সূচনার সঙ্গে নিজেদের সক্রিয়ভাবে যুক্ত করেছে।
কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে বিকল্পধারার জন্য কিছুটা অস্বস্তি ও গভীর হতাশার বিষয় হচ্ছে যে, রাজনৈতিক আন্দোলনের সূত্রপাত বিকল্পধারার হাতে ধরে শুরু, অথচ তার চূড়ান্ত রূপায়নে দল হিসেবে সময়মতো আমাদের উপস্থিত থাকতে না পারা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিকল্পধারার বর্তমান নেতৃত্ব জাতীয় আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে শুধু অনুপস্থিতিই থাকেনি, তারা সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এবং জাতির সামনে এর ভাবমূর্তিকে নেতিবাচকভাবে প্রকাশ করেছে, যা বর্তমানে কর্তৃত্ববাদী সরকারের দল এবং জোটের প্রতিক্রিয়ার ভাষায় প্রতিধ্বনি মাত্র। এ রকম তৎপরতা জন্মলগ্ন থেকে বিকল্পধারার ঘোষিত রাজনীতি বিসর্জনের শামিল। কারও কারও ব্যবসায়িক স্বার্থ ও সীমাহীন আত্মকেন্দ্রিকতা ও পারিবারিক সংকীর্ণ সুবিধাবাধিতা এ গণবিরোধী ভূমিকার উৎসস্থল।
আমরা লক্ষ্য করেছি- এ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে যাদের অগ্রণী ভূমিকা, তারা প্রায় সবাই ১/১১ অরাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাদের অনেকেই মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এতে আরও বলা হয়, এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ যে মামলায় কারাগারে রয়েছেন, সে মামলার নেপথ্যের নায়ক ফখরউদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকারের উপদেষ্টারা যখন বিএনপির পাশে অবস্থান করে, তখন আমরা ব্যথিত ও আতঙ্কিত হই।
কারণ আমাদের ভয় হয় এই ভেবে যে- আমরা শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আরেকটি অগণতান্ত্রিক ও অশুভ শক্তিকে ক্ষমতায় আনার ষড়যন্ত্রের অংশ হতে যাচ্ছি কিনা?
আমরা বাংলাদেশ ন্যাপ ও এনডিপি সাংবিধানিক নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষে। শুধু ক্ষমতার পালাবদলের নামে কোনো অশুভ শক্তি ক্ষমতা গ্রহণ করে আবারও দেশকে রাজনীতিশূন্য করার কোনো অপচেষ্টায় অংশগ্রহণ করুক তা আমরা চাই না।
অন্যদিকে এসব বিষয়ে ২০-দলীয় জোটের প্রধান শরিক বিএনপি সব সময়ই তার শরিকদের অন্ধকারে রাখার অপচেষ্টা গ্রহণ করেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই কাছাকাছি সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। অথচ বিএনপি তার শরিকদের পরিষ্কার অবস্থা ব্যাখ্যা করছে না।
এ প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে ২০-দলীয় জোট শরিক হিসেবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এনডিপি সাংবিধানিক নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির স্বার্থে আজকে এ মুহূর্ত থেকে জোটের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করছে।
আমরা নতুন করে পথ চলতে চাই। প্রকৃত দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্য চাই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন