যে কারণে সিরিজ সেরার পুরস্কার বঞ্চিত হলেন সাকিব
সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে অনেক আগেই বিশ্বকাপ মঞ্চকে বিদায় জানিয়েছে বাংলাদেশ দল। তবু বাংলাদেশি সমর্থকদের চোখ ছিল ফাইনালের পুরস্কার পর্বের দিকে। আর এ বিষয়ে পুরস্কার বিতরণী বিষয়ে চরম কৌতূহলটি ছিল একজন মাত্র ব্যক্তিকে ঘিরেই।
তিনি হলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট সাকিবই হচ্ছেন এমন বিশ্বাস জেগেছিল বাংলাদেসি ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে।
তবে সে বিশ্বাসে শঙ্কাও জমেছিল ঢের। দলের কারণে কি সাকিব বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন সিরিজ সেরা হওয়া থেকে! এমন শঙ্কাই ঘুরপাক খাচ্ছিল টাইগারপ্রেমীদের মস্তিস্কে।
তবু বিশ্বকাপে সাকিবের অতিমানবীয় পারফরম্যান্স অনেকের সে শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছিল। সাকিব ব্যাট হাতে ৬০৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতেও শিকার করেন ১১ উইকেট। ফিল্ডিংয়েও ছিলেন অনন্য।
কিন্তু সব আশার গুড়ে বালি দিয়ে সেই শঙ্কারই জয় হলো। অসাধারণ ব্যাটিং আর ফাইনাল অবধি নিয়ে যাওয়া অধিনায়কত্ব প্রদর্শন করে প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট হলেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
এ নিয়ে বাংলাদেশি সমর্থকদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কারণ, ব্যাটিং পারফরমেন্সের হিসেবে উইলিয়ামসন সাকিবের পেছনে, আর বোলিং নৈপুণ্য ছিল সাকিবের বাড়তি পাওনা। তাই কপিল দেবসহ বিশ্বের কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা সাকিবকেই প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট বিবেচনা করেছিলেন।
সাকিবের ৬০৬ রানের বিপরীতে উইলিয়ামসনের রান ৫৭৮। সাকিবের ১১ উইকেটের বিপরীতে কেন একেবারেই শূন্য।
তবে কেন সাকিব্বের বদলে কেন উইলিয়ামসনকে সিরিজ সেরা বিবেচনা করা হলো!
জবাব একটাই। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে আগের এগার বিশ্বকাপে, কোনোবারই প্রথম পর্বে বাদ যাওয়া দলের খেলোয়াড়কে দেয়া হয়নি আসর সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার।
আর সেই নিয়মের বলি হলেন সাকিব।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের অবস্থান অষ্টম হওয়ায় বিবেচনায় থেকেও সিরিজ সেরা হতে পারেননি সাকিব।
ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বে বাদ পড়ে আসর সেরার পুরস্কার জেতা হয়নি বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের।
তার বদলে পুরো টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক ব্যাটিং এবং প্রায় একা হাতে নিজ দলকে রানার আপ করায় আসরের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
বিশ্লেষকদের মতে, হয়ত বাংলাদেশ দল মিফাইনালে উঠলে সাকিবের একটা সুযোগ ছিল, ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডার ল্যান্স ক্লুজনার সিরিজ সেরা হয়েছিলেন।
সেই আসরে তার রান ছিল ২৮১ রান ও হাত ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন ১৭ উইকেট। সেবার দল সেমিতে হেরে যায়। তবু ফাইনালে ওঠা অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের কোনো খেলোয়াড়কে না করে টুর্নামেন্ট সেরা করা হয়েছিল ল্যান্স ক্লুজনারকে।
একনজরে বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট সেরার তালিকাঃ
১৯৯২ – মার্টিন ক্রো (নিউজিল্যান্ড, ৪৫৬ রান)
১৯৯৬ – সনাৎ জয়াসুরিয়া (শ্রীলঙ্কা, ২২১ রান ও ৭ উইকেট)
২০০৩ – শচিন টেন্ডুলকার (ভারত, ৬৭৩ রান ও ২ উইকেট)
২০০৭ – গ্লেন ম্যাকগ্রাহ (অস্ট্রেলিয়া, ২৬ উইকেট)
২০১১ – যুবরাজ সিং (ভারত, ৩৬২ রান ও ১৫ উইকেট)
২০১৫ – মিচেল স্টার্ক (অস্ট্রেলিয়া, ২২ উইকেট) ২০১৯ – কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড, ৫৭৮ রান)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন