যে পাঁচ শর্তে নির্বাচনে যাবে ঐক্যফ্রন্ট
শর্তসাপেক্ষে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। শনিবার রাতে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
ঐক্যফ্রন্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রহণযোগ্য ও অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলেই কেবল নির্বাচনে যাবে ড. কামালের নেতৃত্বাধীন এ জোট। গতকাল রাতের বৈঠকে এ বিষয়ে সবাই একমত হন।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হচ্ছে-আজ দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ড. কামাল হোসেন নির্বাচনের তফসিল পেছানোর দাবি জানাবেন। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রার কর্মসূচি দেবেন।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় এক বৈঠক শেষে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে অগ্রহণযোগ্য কোনো নির্বাচনের আভাস পেলে আমরা সেখানে যাব না। তখন নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এবার সরকারকে ওয়াকওভার দেবে না বিরোধী জোট। নির্বাচন করার ন্যূনতম পরিবেশ সৃষ্টি হলেই নির্বাচনে যাবে। সে জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বেশ কয়েকটি শর্ত দেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
শর্তগুলোর প্রথমটি হচ্ছে-নির্বাচনে সব দলের জন্য সমতল ক্রীড়াভূমি (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) সৃষ্টি করা।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে-বিএনপি ও ২০-দলীয় জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি।
তৃতীয়টি হচ্ছে-তফসিল পিছিয়ে দেয়া।
চতুর্থটি হচ্ছে-মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় গ্রেফতার হওয়া রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি। পাশাপাশি রাজনৈতিক মামলায় নতুন করে গ্রেফতার বন্ধ করা।
পঞ্চমটি হচ্ছে-সংসদ ভেঙে নির্বাচন দেয়া। এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা হচ্ছে-একজন প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ১০ উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে তাদের অধীনে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা।
নির্বাচন যাওয়া না যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শনিবার বিকাল ৫টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এর পরপরই বসেন ২০-দলীয় জোটের শরিকরা। এসব বৈঠকে নেতারা নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখান। সর্বশেষ রাতে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বসেন। সেখানে দিনব্যাপী যে মতামত পাওয়া গেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে জোট বেঁধে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার তথ্য নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করে আজ চিঠি দেবে বিএনপি ও জোটের নিবন্ধিত শরিক দলগুলো। চিঠির সঙ্গে তফসিল পেছানোর আবেদন জমা দেয়া হবে। এ ছাড়া আগামীকাল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বসতে চান। এ জন্য আজ কমিশনের কাছে সময় চাওয়া হতে পারে।
আজ সংবাদ সম্মেলনের আগে সকাল ১০টায় ড. কামাল হোসেনের বাসায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের বসার কথা রয়েছে। সেখানেই সংবাদ সম্মেলনে যা বলা হবে তা ঠিক করা হবে।
এর পর সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জাতির কাছে স্পষ্ট করবেন তারা। রাতে জোটের একাধিক নেতা বলেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবেই তারা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন